সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর নীলক্ষেতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২১ এএম
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এর অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর নীলক্ষেত মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল থেকেই নীলক্ষেতে সাত প্লাটুন পুলিশ অবস্থান নেয়, সঙ্গে আরও পাঁচ প্লাটুন পুলিশ রিজার্ভে রয়েছে।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাঁচ দফা দাবি নিয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির প্রো-ভিসির সাথে আলোচনা করতে গেলে তিনি ‘দুর্ব্যবহার’ করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা। এই অভিযোগের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করেন তারা এবং প্রো-ভিসি ড. মামুন আহমেদকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেন।
প্রো-ভিসির সাড়া না পেয়ে রাত ১১টার দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়ে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হন। খবর পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই নীলক্ষেত সংলগ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের প্রবেশমুখে অবস্থান নেন।
রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকা কলেজের সামনে থেকে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন। অন্যদিকে, ঢাবি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে লাঠি নিয়ে অবস্থান করেন। দু’পক্ষের মধ্যে ঢিল ছোড়াছুড়ির পর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল, কিন্তু উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পরবর্তীতে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাত কলেজের সমস্যা ও ভর্তির আসনসংখ্যা কমানোর বিষয়ে ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) কাছে গেলে তিনি অশোভন আচরণ করেন এবং রুম থেকে বের করে দেন। প্রো-ভিসি ড. মামুন আহমেদ বলেন, তিনি সাত কলেজের বিষয়ে কিছু জানেন না। শিক্ষার্থীরা ২১ দিন আগে স্মারকলিপি দিলেও প্রো-ভিসি তা পড়েননি বলে অভিযোগ করেন এবং তার আক্রমণাত্মক ব্যবহারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুর রহমান ঢাবির প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদকে অশোভন আচরণের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে পাঁচ দফা দাবির কথা জানান। তাদের দাবিগুলো হলো:
১. ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।
২. সাত কলেজের শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না।
৩. শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে।
৪. সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্ক যুক্ত করতে হবে।
৫. সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাবি ছাড়া নতুন একটি অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফির টাকা জমা রাখতে হবে।
এ ঘটনায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ঢাবি প্রশাসনের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।