Logo
Logo
×

সারাদেশ

রূপগঞ্জে দুই মহাসড়কে ১৫ স্পটে নেই ট্রাফিক পুলিশ, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২৮ পিএম

রূপগঞ্জে দুই মহাসড়কে ১৫ স্পটে নেই ট্রাফিক পুলিশ, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

রূপগঞ্জে দুই মহাসড়কে ১৫ স্পটে নেই ট্রাফিক পুলিশ, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক এখন নিত্যদিনের তীব্র যানজট লেগেই থাকছে। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীসাধারনের। শত শত মালবাহী গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা আটকা পড়ছে। আটকা পড়ে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল। আটকা পড়ছে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও। দুই মহাসড়কের প্রায় ১৫ স্পটে নেই ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও সড়ক নির্মাণ কাজের কারনে সড়ক গুলো ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব ভাঙ্গা সড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন বিকল হয়ে পড়ছে। এতে সড়কের এক পাশ বন্ধ হয়ে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। রূপসী, বরপাসহ কয়েকটি বাস স্টেশনে শিক্ষার্থীদের যানজট নিরসনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

 বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের  বিশ্বরোড, যাত্রামুড়া, বরাব, রূপসী, বরপা, গোলাকান্দাইল, ভুলতা, এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কের গোলাকান্দাইল, কোশাব, কালাদি, চাঁন টেক্সটাইল, জিন্দা, লালমাটি, কাঞ্চন টোলপ্লাজা, কালাদি রূপসী সড়কের ত্রিশকাহিনা, মুড়াপাড়া, দড়িকান্দি, মুড়াপাড়া শীতলক্ষা ব্রীজে এ যানজটের চিত্র দেখা যায়।

গাড়ি চালক, যাত্রীসাধারন, পথচারী ও স্থানীয় সুত্র জানায়, রূপগঞ্জ একটি গুরুত্বপুর্ণ উপজেলা। এখানে ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার শিল্প কারখানা রয়েছে। এসব শিল্প কারখানায় কয়েক লাখ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এছাড়া এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়ক। আর এ দুই মহাসড়ক যোগে দেশের সব গুলো জেলার মালবাহি যানাবাহন ও বাস যোগে যাত্রী সাধারন চলাফেরা করে থাকেন। ওই দুই মহাসড়কেরই প্রসস্থ্যকরন ও নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে ১৫টি স্পটে দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশ নেই। বেশ কিছুদিন ছাত্র সমাজ ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া এখনো বেশকিছু স্থানে তারা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ বাহিনীকে যার যার কর্মস্থলে যোগদান করার নির্দেশনা থাকলেও যানজট নিরসনে রূপগঞ্জের মহাসড়ক দুটির ১৫ স্পটে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। পুলিশবিহীন, সড়ক সংস্কার ও প্রশস্তকরক কাজ চলামান, নিয়ম ভঙ্গ করে যানাবাহন চলাচল, ফিটনেসবিহী গাড়ি চলাচল, কাঞ্চন টোলপ্লাজায় টোল আদায়ে ধীরগতি ও বাকবিতন্ডাসহ নানা কারনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কে নিত্যদিন তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। অপর দিকে, কালাদি-রূপসী সড়কেও দীর্ঘ যানজট লেগে থাকছে। মুড়াপাড়া শীতলক্ষ্যা ব্রীজ সংলগ্ন সড়কে সড়ক ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে পড়ে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি আটকে পড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজটের কারনে বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকরা পায়ে হেটেই কর্মস্থলে যাচ্ছেন। এসব যানজটে আটকা পড়ে অনেকেই চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনার শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, যানজটের কারনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিদেশগামী যাত্রীরা এশিয়ান হাইওয় বাইপাস সড়ক ব্যবহার করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সময়মতো পৌছুতে পারছেনা। অনেকেই ফ্লাইট মিছ করছেন। বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা যানজটের কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পৌছুতে পারছেনা। এতে করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সিলেট থেকে আসা গাজীপুরগামী মালবাহী ট্রাক চালক আলী আকবর বলেন, গোলাকান্দাইল থেকে কাঞ্চন টোলপ্লাজায় আসতে সময় লেগেছে ৪ ঘন্টা। এখনও যানজটে আটকা পড়ে আছি। কখন গাজীপুর পৌছুতে পারবো জানিনা।

বগুরা থেকে চট্রগ্রামগামী ট্রাক চালক আব্দুস সালাম বলেন, মালবাহি গাড়ি নিয়ে চলতে গিয়ে আমরা আতঙ্কে থাকি। সড়কে নেই হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তির শেষ নেই। আমাদের গাড়ির চালকরা অনেকেই ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

বিশ্বরোড এলাকার শ্রমিক আমেনা বেগম বলেন, প্রতিদিন এখন যানজট লেগে থাকে। এ জন্য এখন পায়ে হেটেই কর্মস্থলে যাই। প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা অতিক্রম করতে অবশ্য দেড় ঘন্টা আড়ে রওনা দিতে হয়। এতে করে কষ্ট বাড়ে।

শেখ রাসেল ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী সোয়াদা ইসলাম, মায়িদা ইসলাস, তানহা, ইফা আক্তার বলেন, ভুলতা এলাকা থেকে এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস ও ৩০০ফুট সড়ক যোগে জলসিড়ি এলাকায় অবস্থিত আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। কোন দিন হাফ ক্লাস, কোন কোন দিন ক্লাসই করতে পারিনা। কারন যানজটে আটকা পড়ে সড়কে বাসেই সময় পার হয়ে যায়। যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তারা।  

অ্যাম্বুলেন্স চালক জাহিদ মিয়া বলেন, ভুলতা এলাকায় প্রায় ১৫টির মতো সরকারী-বেসরকারী হসপিটাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে আসা মুমুর্ষ রোগী ঢাকা নিয়ে যেতে হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়ক ব্যবহার করতে হয়। অনেক সময় দীর্ঘ যানজট থাকার কারনে গাড়িতে রোগির মৃত্যু হচ্ছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা জটিল হয়ে পড়ছে। যানজট নিরসন করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করেন তিনি।

ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্বল্প পুলিশ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এখনও সকল পুলিশ আসেনি। এছাড়া সব জায়গায় এখন যানজট। আমরা যানজট নিরসনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

বিশ্বরোড পুলিশ বক্সের ইনচার্জ শরফুদ্দিন বলেন, তারাব এলাকার সাইটের যানজট নিরসন করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এখন কাঁচপুর-চট্রগ্রাম মহাসড়কে যানজট রয়েছে। বর্তমানে ওই যানজট নিরসনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন