Logo
Logo
×

সারাদেশ

বন্যায় কৃষি খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ এএম

বন্যায় কৃষি খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি

বন্যায় কৃষি খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি

দেশে আকস্মিক বন্যায় ২৪টি জেলার কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তায় বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকায় এখনো পানি থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার কোনো উপায় নেই। মূলত ক্ষতিগ্রস্ত ২৪টি জেলায় ১৭ লাখ ৭২ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ করা হয়।

এরমধ্যে তিন লাখ ৭২ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে এসব জেলার অন্তত ২০ শতাংশ ফসলি জমি বন্যার পানিতে ডুবে আছে। ক্ষতি হওয়া আবাদি জমির মধ্যে রয়েছে- আউশ ৭৪ হাজার ১১৬ হেক্টর, রোপা আমন দুই লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৭ হেক্টর, বোনা আমন ৩৬ হাজার ২৪৮ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ৪৪ হাজার ৯৯১ হেক্টর।

এছাড়া শাক-সবজি ১৫ হাজার ৫৬১ হেক্টর, আদা ১৬১ হেক্টর, হলুদ ২৪৬ হেক্টর, আখ ৬৫৭ হেক্টর, পান ৬৪৭ হেক্টর, ফলের বাগান ১১ হাজার ৮০০ হেক্টর, মরিচ ১২৭ হেক্টর, তরমুজ ৫৬ হেক্টর, পেঁপে ২৩ হেক্টর, ভুট্টা তিন হেক্টর, পেঁয়াজ এক হেক্টর ও গ্রীষ্মকালীন টমেটো ১৫ হেক্টর। সব মিলিয়ে প্রায় ৫৭ হাজার ৮২২ হেক্টর জমির শাক-সবজি বিনষ্ট হয়েছে। এ খাতে আর্থিক ক্ষতি অন্তত তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

অপরদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় জানমালের ক্ষতিসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব খাতে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৯০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

বন্যায় লাখ লাখ টন গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খাদ্য এবং অন্যান্য পশুখাদ্য নষ্ট হয়। এই খাতে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ দুধ, ডিমসহ প্রায় ৪১১ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর, দিঘি, খামারের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৯৯টি। ক্ষতিগ্রস্ত মাছ ও চিংড়ির পরিমাণ ৯০ হাজার ৭৬৮ মেট্রিক টন। ৩ হাজার ৭৪৬ লাখ মাছের পোনা ও চিংড়ির পোস্ট লার্ভা বিনষ্ট হয়েছে।

কৃষি বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে প্রায় ২০ লাখ টনের বেশি শস্য উৎপাদন সম্ভব হতো। বন্যার কারণে এ ক্ষতির পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা হবে। যদি পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না করা যায়, তাহলে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও দেশের খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

সাবেক কৃষি সচিব ও কৃষি বিশেষজ্ঞ আনোয়ার ফারুক বলেন, কৃষির এত বড় ক্ষতি আগে কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না। সরকারকে কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। চাষিদের বিনামূল্যে সার, বীজ, ধানের চারা দিয়ে সহায়তা করা উচিত। আর যাদের মুরগির খামার বিনষ্ট হয়েছে, তাদের বিনা সুদে ঋণ দেয়া একান্ত অপরিহার্য। মৎস্য চাষিদের প্রণোদনা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরজমিন উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের পর আর আমন ফসলের মৌসুম থাকে না। বন্যায় আমন ফসলের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। এখনো অনেক জেলায় পানি জমে আছে। দ্রুত বীজতলা করে আবার আমন ফসল ফলাতে বেশ সমস্যা হবে। সরকার কিছু কিছু জায়গায় কৃষকদের মধ্যে আমন বীজ বিতরণ করেছে। তবে ১৫ সেপ্টেম্বরের পর অন্য ফসলে চলে যাওয়াই ভালো হবে। কারণ কৃষি গবেষকদের মতে, তখন আর আমনের মৌসুম থাকে না।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ক্ষতি তো বলে শেষ হবে না। ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্তভাবে নিরূপণ করা যাবে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন