তিস্তায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস, নদীর গতিপথ পরিবর্তনের শঙ্কা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
তিস্তায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস, নদীর গতিপথ পরিবর্তনের শঙ্কা
ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। এরফলে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ২ নং সলিডারী স্পার বাঁধের সিসি ব্লক ধসে পড়েছে। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছে তীরবর্তী মানুষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না। পানি আরো বৃদ্ধি পেলে ভাঙন বেড়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের।
তীরবর্তী মানুষরা জানান, তিস্তার ভাঙন থেকে লালমনিরহাট সদর ও আদিতমারী উপজেলাকে রক্ষা করতে ২০০৪ সালে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধনে ২ নং সলিডারী বন্যা নিয়ন্ত্রণ স্পার বাঁধ নির্মাণ করে পাউবো। এরপর একাধিকবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ স্পার-২ এ ধস দেখা যায়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কোনো পদক্ষেপ নেন না। এর ফলে এবারো নতুন করে ধস দেখা দিয়েছে। যদিও স্থানীয়দের সহযোগিতায় অস্থায়ী জরুরি প্রতিরক্ষা ও আপদকালীন বরাদ্দ থেকে জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করছে পাউবো। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধের সামনের অংশের আরসিসি পার্ট ভেসে গিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের।
ওই এলাকার আমিনুর রহমান জানান, প্রতিবছর তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলে মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ স্পার-২ এ ধস দেখা যায়। কিন্তু যখন নদীতে পানি থাকে না তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এর খবর রাখে না। এখন পানি বেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ স্পার-২ এ ধস হয়েছে, এখন জিও ব্যাগ ফেলছে। আগে ব্যবস্থা নিলে কয়েকটি বাড়ি রক্ষা পেত।
পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, বাঁধের সিসি ব্লক ধসে যাওয়ায় জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন থেকে রক্ষা করা হচ্ছে। এ বাঁধের জন্য মজুত রয়েছে। প্রয়োজনে আরো জিও ব্যাগ নেয়া হবে। তীরবর্তী মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা সবসময় তাদের পাশে আছি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এ অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। ফলে নিচু এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, উজানের ঢলে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি হয়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় বিভিন্ন বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, গত জুন মাস থেকে তিস্তায় পানি বাড়ায় আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল জেলার ৫ হাজার মানুষ। তবে তিস্তা পানি বিপৎসীমার ওপরে কখনো যায়নি। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি হওয়ার ফলে অনেক উঠতি ফসল ঘরে তুলতে পারেনি চরাঞ্চলের কৃষকরা।