ঝিনাইদহে সার সংকটে পেঁয়াজের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম
ছবি : সংগৃহীত
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলায় পেঁয়াজ আবাদের ভরা মৌসুমে রাসায়নিক সারের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। চাহিদার তুলনায় নির্ধারিত সময়ে ডিলারদের কাছে সার পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কৃষকরা খোলা বাজার থেকে অতিরিক্ত দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা, যা তাদের পেঁয়াজ উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
ধাওড়া গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন তিনি। সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ না করতে পারলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। একই অভিযোগ করেছেন মদনডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আইয়ুব হোসেন, যিনি দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করেছেন। তিনি জানান, সরকার নির্ধারিত দামে ডিলারের কাছ থেকে সার পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে খোলা বাজারে বস্তাপ্রতি ৩০০-৪০০ টাকা বেশি দিয়ে সার কিনতে হচ্ছে।
আবুল হোসেন নামের আরেক কৃষক জানান, চাহিদা ৬ বস্তা হলেও সারাদিন দাঁড়িয়ে থেকে ডিলারের কাছ থেকে এক বস্তা সার মেলে। ইসমাইল নামে এক কৃষক বলেন, “সময়মতো জমিতে সার প্রয়োগ না করতে পারলে ফলন ভালো হবে না। এতে পুঁজি হারানোর শঙ্কা রয়েছে। এমন হলে ভবিষ্যতে আর পেঁয়াজ চাষ করব না।”
ডিলারদের দাবি, বরাদ্দ কম হওয়ায় কৃষকদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, “কিছু কৃষক প্রয়োজনের বেশি সার ঘরে মজুদ করায় সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে সব কৃষককে চাহিদা অনুযায়ী সার দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তাদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে শৈলকুপায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য ইউরিয়া, টিএসপি, এবং ডিওপিসহ রাসায়নিক সারের চাহিদা ধরা হয়েছে ৮ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু সরবরাহের ঘাটতি এবং ডিলারদের দুর্নীতি কৃষকদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে।
কৃষকরা দ্রুত সারের সংকট সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, সঠিক সময়ে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ফলন বিপর্যয়ের ফলে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন, যা ভবিষ্যতে পেঁয়াজ চাষে তাদের নিরুৎসাহিত করবে।