মিরসরাইয়ে ৬ আদিবাসী পাড়ায় চরম বিশুদ্ধ পানির সংকট
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ছয়টি আদিবাসী পাড়ায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে এই সংকট আরও প্রকট হয়ে ওঠে। অনেক পরিবার মাসিক চুক্তিতে পানি কিনে প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করে, যা দরিদ্র পরিবারের জন্য আর্থিক কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মিরসরাই সদর ইউনিয়ন ও এর আশপাশের ৬টি আদিবাসী পাড়া—তালবাড়িয়া, সাইবেনীখীল, নলখো, কয়লা, কালাপানিয়া এবং খৈয়াছরা ইউনিয়নের পূর্ব মসজিদিয়া ত্রিপুরাপাড়া—মোটামুটি ১ হাজার ত্রিপুরা পরিবারের আবাসস্থল। তবে এই পাড়াগুলোর অধিকাংশ এলাকাতেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। কিছু পরিবারের নলকূপ থাকলেও বেশিরভাগ মানুষ কুয়া ও কেনা পানি ব্যবহার করে।
তালবাড়িয়া ত্রিপুরাপাড়ার সর্দার উত্তম ত্রিপুরা জানান, শীত মৌসুমে কুয়ার পানি শুকিয়ে যায়, আর বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে কুয়ার পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পাঁচ বছর আগে ১৩টি কুয়া স্থাপন করা হলেও বর্তমানে এর মধ্যে কার্যকর রয়েছে মাত্র চারটি।
পূর্ব মসজিদিয়া ত্রিপুরাপাড়ার বাসিন্দারা জানান, সেখানে ৭০টি পরিবারের জন্য ছড়া হলো একমাত্র পানির উৎস। তবে শুষ্ক মৌসুমে এই ছড়ার পানি শুকিয়ে যায় এবং বর্ষাকালে তা পাহাড়ি ঢলের কারণে তলিয়ে যায়।
করেরহাট ইউনিয়নের সাইবেনীখীল পাড়ায় প্রায় ৫০০ জনের বসবাস। সেখানে মাত্র ৩৫টি পরিবারের কাছে টিউবওয়েল আছে। বাকি পরিবারগুলো মাসিক ৫০-১০০ টাকার বিনিময়ে টিউবওয়েল থেকে পানি কিনে চাহিদা মেটায়।
অনেক পরিবার পাহাড়ি ছড়া থেকে সংগ্রহ করা পানি পান করে। ফলে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী কেএম সাঈদ মাহমুদ জানান, পাহাড়ি এলাকায় গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব নয়। তবে রিং টিউবওয়েলের মাধ্যমে পানি সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে। নতুন কিছু রিং টিউবওয়েল স্থাপন করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনে এগিয়ে আসা। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এটি অত্যন্ত জরুরি।