Logo
Logo
×

সারাদেশ

কুষ্টিয়ায় গাঁজা কেনা নিয়ে তর্ক, হেলপারের হাতে ট্রাকচালক খুন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম

কুষ্টিয়ায় গাঁজা কেনা নিয়ে তর্ক, হেলপারের হাতে ট্রাকচালক খুন

ছবি : সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় গাঁজা কেনা নিয়ে ট্রাকচালক তরিকুল শেখ (৩২) এবং হেলপার আল আমিন শেখ (২৭) এর মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এতে হেলপার ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার পাইপ দিয়ে ট্রাক চলন্ত অবস্থায় চালকের মাথায় একাধিকবার আঘাত করে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ ট্রাকের সামনে ফেলে সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজান হেলপার। পরে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ উদ্ধার করে দাফন সম্পন্ন করে নিহতের পরিবার।

গত ১৪ ডিসেম্বর ভোরে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাইপাস সড়কে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উত্তর কয়া গ্রামের কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ট্রাকচালক তরিকুল শেখ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের উত্তর কয়া গ্রামের ছাবদুল শেখের ছেলে। অভিযুক্ত আসামি আল আমিন শেখ খোকসা উপজেলার শিংগুরিয়া চরপাড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ট্রাকচালক তরিকুল ইসলামকে লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে হেলপার আল আমিন। হত্যার পর সে সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজায়। পরে হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য বেরিয়ে আসে। হেলপার হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খায়রুজ্জামান জানান, হত্যাকাণ্ডের আগের দিন চালক ও হেলপার ট্রাকে মালামাল নিয়ে মোংলায় গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে ঝিনাইদহে তারা খাওয়া-দাওয়া করে। পরে মালামাল নিয়ে পঞ্চগড়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বাইপাস সড়ক এলাকায় চালক তরিকুল হেলপার আল আমিনকে বলেন, ‘তোকে গাঁজা কিনতে বলেছিলাম, গাঁজা কিনেছিস?’ তখন হেলপার বলেন, ‘গাঁজা কিনিনি।’ এ নিয়ে চালক ও হেলপারের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে ট্রাকচালক হেলপারকে আঘাত করেন। পরে ট্রাক চালানোর সময় হেলপার ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার পাইপ দিয়ে চালকের মাথায় একাধিকবার আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর সুগার মিল সংলগ্ন এলাকায় বাইপাস সড়কে মাইলফলকের সাথে গাড়িটা ঠেকিয়ে চালকের মরদেহ ট্রাকের সামনে রেখে সড়ক দুর্ঘটনার নাটক করেন। পরে বিনা ময়নাতদন্তে তার মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়।

তিনি আরও জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় সেদিনই হেলপারের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং হেলপারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন হেলপার। যেহেতু বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দাফন করা হয়েছিল, তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, নিহতের পরিবার, স্থানীয় মানুষ, পুলিশ সদস্যরাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসীন উদ্দীন জানান, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহের অবস্থা দেখা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন