স্কুলের ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা’ গান বাজানো নিয়ে প্রধান শিক্ষককে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

ছবি : সংগৃহীত
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার দেওয়ালী বথুনদিয়া পাঁচুরিয়া (ডি.বি.পি) উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা বাংলার জয়, জয় বাঙালির জয়’ গানের সঙ্গে একটি নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ রিজাউল ইসলামকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ভিডিওটি ভাইরাল হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার প্রধান শিক্ষককে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ১১ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সময় ছাত্রজনতার বিপ্লবের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ গান পরিবেশিত হয়েছে, যা ছাত্রদের হতাশ করেছে। এ কারণে প্রধান শিক্ষককে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তা নির্ধারণের জন্য কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মেয়ে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করছে। গানটি শুরুর আগে কয়েক সেকেন্ডের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের অংশ বাজানো হয়, যেখানে তিনি বলছেন, "এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম"।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার বলেন, "আমি দুপুর দেড়টার দিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম, তবে জরুরি কাজ থাকায় অনুষ্ঠান শুরুর আগেই চলে যাই। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে বিষয়টি জানতে পারি এবং প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ বলেন, "আমি ওই বিদ্যালয়ের ক্রীড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম না, তবে পরে বিষয়টি শুনেছি। প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং তার জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ রিজাউল ইসলাম জানান, "১১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী নিজের মোবাইল ফোন থেকে গানটি বাজিয়ে নাচ শুরু করে। তবে গান শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তা বন্ধ করে দিই।"
তিনি আরও দাবি করেন, "একটি মহল বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে গান শুরুর আগে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অংশ এডিট করে সংযুক্ত করেছে।"
এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পরই প্রশাসন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।