দেশের মানুষ আর কোনো আয়নাঘর দেখতে চায় না : মুফতি ফয়জুল করীম

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:০৮ এএম

ছবি : সংগৃহীত
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, দেশের মানুষ আর কোনো আয়নাঘর দেখতে চায় না। চোর-দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ এবং রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়। যে নিজেই অন্যায় ও দুর্নীতিতে লিপ্ত, সে কখনো ন্যায়ভিত্তিক সমাজ উপহার দিতে পারে না। তাই জালিম ও দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে ইসলামপন্থি নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে ইসলামী অনুশাসন চালু করতে হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার দুর্গাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইসলামপন্থি দলগুলোর ঐক্যই দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করার একমাত্র চাবিকাঠি। জালিমদের হাত থেকে আল্লাহভীরু নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা আজ সময়ের অনিবার্য দাবি। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার আদায়ে জনগণ জীবনবাজি রেখে সংগ্রাম করেছে। তিনি দাবি করেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, "এ দেশ সকলের— ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তারাই পরিকল্পিতভাবে হিন্দু মন্দিরে হামলা চালায়।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন, "৫ আগস্টের বিপ্লবের পরও এক গোষ্ঠী দখলদারি, চাঁদাবাজি ও ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে। এসব বন্ধ না করলে প্রকৃত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। রাষ্ট্র সংস্কার করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এখন সময়ের দাবি। তবে বারবার দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় আনলে জনগণের দুঃখ-দুর্দশা দূর হবে না।"
তিনি বলেন, "আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) পদ্ধতিতে করতে হবে। এতে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ হবে, জনগণ মার্কায় ভোট দেবে, ব্যক্তিকে নয়। এতে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে এবং নির্বাচনী দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে।"
তিনি আরও বলেন, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে। এ দেশ সব ধর্মের মানুষের, তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
ইসলামী অর্থনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ইসলাম ক্ষমতায় এলে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। ইসলামী অর্থনীতি চালু হলে ঘুষ, লুটপাট ও দুর্নীতি থাকবে না। আদর্শিক পরিবর্তন ছাড়া প্রকৃত মুক্তি সম্ভব নয়।"
তিনি আরও বলেন, "৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান কোনো একক দলের ছিল না, এটি সকলের আন্দোলন ছিল। কোনো দল বা ব্যক্তি গণহত্যাকারী মাফিয়া গোষ্ঠীকে ক্ষমা করার অধিকার রাখে না। বিগত ১৬ বছরে বহু পরিবার ধ্বংস হয়েছে, অসংখ্য মায়ের বুক খালি হয়েছে, শত শত শিশু বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই নারকীয় তাণ্ডবের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কাউকে ক্ষমা করা যাবে না।"
গণসমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মকবুল হোসাইন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবদিন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে ইসলামী অনুশাসনের বিকল্প নেই।