চলছে গরমের প্রস্তুতি, তালপাতার পাখা তৈরিতে ব্যস্ত বাগেরহাটের কারিগড়রা

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৯ এএম

বাগেরহাটের ফকিরের হাট উপজেলার মানসা গ্রামে তালপাতা কেটে রোদে শুকানো হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
বসন্তের শেষ ভাগে প্রকৃতিতে গরমের বার্তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শরীর শীতল রাখতে ঐতিহ্যবাহী তালপাতার পাখার কদর এখনো রয়েছে। প্রযুক্তির এই যুগেও শহর-বন্দর থেকে গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত গ্রীষ্মকালে তালপাতার পাখার ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মানসা গ্রামে এখন তালপাতার পাখা তৈরির ব্যস্ততা তুঙ্গে। দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রাম তালপাতার পাখা তৈরিতে খ্যাতি অর্জন করেছে। এখানকার বেশ কয়েকটি পরিবার বংশপরম্পরায় এ পেশায় জড়িত।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মানসা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা তালপাতা শুকানোর কাজ চলছে। মাঠে ও ফাঁকা জায়গায় ছড়ানো শত শত তালের পাতা, রিকশাভ্যানে করে আনা কাঁচা পাতা, আর কর্মব্যস্ত কারিগড়দের হাতে তালপাতার পাখা পূর্ণতা পাচ্ছে।
স্থানীয় কারিগড় নয়ন ফকির জানান, ফাল্গুন মাসের শুরু থেকেই পাখা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, যা জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চলবে। প্রতিটি পরিবার ২৫ থেকে ৩০ হাজার পাখা তৈরি করে, যা দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হয়। প্রথমে কাঁচা পাতা রোদে শুকিয়ে, শিশিরে রেখে মাপমতো কেটে বাঁশ, সুতা ও রঙের ব্যবহার করে পাখা তৈরি করা হয়।
অন্য কারিগড় মো. রাজিব শেখ জানান, পাইকারদের চাহিদা অনুযায়ী ছোট-বড় নানা আকারের পাখা তৈরি হচ্ছে। পাইকারদের কাছে প্রতিটি পাখা ১২ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়, আর খুচরা বাজারে তা ৩০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যায়।
প্রযুক্তির যুগে বৈদ্যুতিক পাখার সহজলভ্যতা থাকলেও তালপাতার পাখার কদর কমেনি। অনেকে এখনো বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহার করেন। ফলে যুগের পর যুগ ধরে তালপাতার পাখা তৈরির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে মানসা গ্রামের কারিগড়রা।