রেমিট্যান্স পাঠানো দেশের তালিকায় শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র
যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২১ পিএম
ফাইল ফটো
গত তিন মাসে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষস্থান দখল করেছে। এর পরে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে মোট ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার, যা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৯৯ কোটি ডলার, যা আগের তুলনায় কম। অন্যান্য শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ইতালি, ওমান, কাতার এবং সিঙ্গাপুর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির একটি ব্যতিক্রমী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। আগস্ট মাসে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার, যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ কোটি ডলারে—৩৪ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি। এরপর অক্টোবরে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৫০ কোটি ডলার, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। নভেম্বরে এই পরিমাণ আরও বেড়ে ৫১ কোটি ১৯ লাখ ডলারে পৌঁছায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, গত পাঁচ মাসে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩০০ কোটি ডলার, আর রফতানি আয় বেড়েছে ২৫০ কোটি ডলার। তিনি বলেন, অর্থনীতিতে এখনও স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে এবং রিজার্ভ চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো যথেষ্ট। তবে সতর্ক থাকা জরুরি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, টাকা-পাচার বন্ধ ও ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। তবে প্রবাসে রাজনৈতিক বিভাজন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
সরকারি প্রণোদনা প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আনার জন্য ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, যা বছরে সরকারের ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে সক্রিয় লবিং ছাড়া বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি অসম্ভব।
এই বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নীতিগত উদ্ভাবন ও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।