বাংলাদেশের জলবায়ু ক্ষতিপূরণ ও ঋণের ফাঁদ : বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের দাবি

যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ এএম

ছবি : সংগৃহীত
ধনী ও দূষণকারী দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনাল। তবে এই অর্থ পরিশোধ না করে, উন্নয়নের নামে বাংলাদেশকে প্রায় ৭৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণের ফাঁদে ফেলছে উন্নত দেশগুলো। সংস্থার প্রতিবেদনে জরুরি ভিত্তিতে এই বিদেশি ঋণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব গভীর ও বিপজ্জনক। শিল্পোন্নত দেশগুলোর কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে, যার ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ১৭ শতাংশ ভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে প্রায় ২ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। পরিবেশ দূষণের এই ভয়াবহ প্রভাব বিবেচনায়, ধনী ও দূষণকারী দেশগুলোর কাছে বড় অংকের ক্ষতিপূরণ পাওনা রয়েছে বাংলাদেশের।
সম্প্রতি অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনাল একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ধনী ও দূষণকারী দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা। অথচ তারা এই অর্থ পরিশোধ না করে, উল্টো বাংলাদেশকে প্রায় ৭৮ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণের ফাঁদে ফেলে দিয়েছে।
প্রতিবেদনের সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশ বিদেশি ঋণের ফাঁদে পড়েছে। জাতীয় উন্নয়ন বিসর্জন দিয়ে দেশগুলো ধনী দেশগুলোর কাছে ১৩৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। সমীক্ষা আরও বলছে, জলবায়ু দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর কাছে ১০৭ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণী ধনী দেশগুলো; যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর বৈদেশিক ঋণ ১ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি।
অ্যাকশনএইডের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ধনী দেশগুলো, বেসরকারি ঋণদাতা এবং বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু কর্মসূচিসহ অপরিহার্য সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সংস্থাটি জরুরি ভিত্তিতে বিদেশি ঋণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছে।