সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে শিক্ষার্থীদের আসন বরাদ্দ পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০৪ পিএম
২০২১ সালে বন্ধ করে দেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে শিক্ষার্থীদের পুনরায় সিট বরাদ্দের কথা ভাবছে হল প্রশাসন।
২০২১ সালে হঠাৎ সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বারান্দায় ফাটল দেখা দেয়। তখন হল প্রশাসন কোনরকম প্রকৌশল পরীক্ষা ছাড়া অনুমান ভিত্তিকে ৩৬টি রুম বন্ধ করে দেয় এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে বলে। শুধুমাত্র ১০টি রুম খালি করা হলেও অধিকাংশ রুমে শিক্ষার্থীরা থেকে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তে ২০২১ সাল থেকে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে নতুন আবাসিক শিক্ষার্থীদের অন্তভুক্ত করা স্থগিত ছিল। তবে হলটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এমফিল এবং পিএইচডি শিক্ষার্থীদের আবাসিকতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যদিও নতুন শিক্ষার্থীরা হলে স্থান পাচ্ছে না, তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন কেন এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের কেই বা সুযোগ দেওয়া হলো। অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে হলটি অব্যবহৃত ছিল, এবং ছাত্রলীগ তাদের প্রচারে 'মুসলিম' শব্দটি ব্যবহার করতো না।
জুলাইয়ের আন্দোলনের পর, দৃশ্যপট পাল্টে যায়। সেপ্টেম্বর মাসে নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেয়। নতুন শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ না হওয়ার খবর পেয়ে, হলের প্রভোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় বুয়েটের বিআরটিসিকে প্রকৌশল জরিপ করতে অনুরোধ করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টিকে আন্তরিকভাবে নিয়ে অর্থ বরাদ্দ করে। অক্টোবর মাসে ঝুঁকিনিরূপণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিআরটিসিকে। বুয়েটের পরীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী অনুমান ভিত্তিতে বন্ধ করা ৩৬টি রুমের বদলে ২১টি রুম খালি করার নির্দেশ দেয়। বুয়েট আরও অনুমান করে, পূর্ণাঙ্গ প্রকৌশল পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকৌশল পরীক্ষার জন্য বুয়েটকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী, পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলমান এবং বুয়েট নকশা প্রণয়ন করছে যাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজের মাধ্যমে হলটিকে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করা যায় আর শিক্ষার্থীদের বসবাসের জন্য উপযুক্ত করে তোলা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং প্রাধ্যক্ষ, প্রধান প্রকৌশলী এবং বুয়েটের এক অধ্যাপকসহ গঠিত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী সভা ১৪ জানুয়ারিতে আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সভায়, নতুন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তি ও অতিরিক্ত ভবন নির্মাণের মতো বিষয়গুলো আলোচনা হবে।
স্যালিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহ-আল মামুনের মতে, "বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলটির সংস্কার এবং নতুন শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দে আন্তরিক। গত চার মাসে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।"
ড. মামুন আরও বলেন, "আমি জানি, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছে, যা ন্যায়সঙ্গত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করছেন। আশা করছি দ্রুতই হলের রক্ষণাবেক্ষণ এবং নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।"
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী ১৪ জানুয়ারি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে বিষয়টি বিবেচনা করে হলে নতুন আবাসিক শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।