জাবির ছাত্রী হলে মধ্যরাতে আটক নারীর বেশধারী যুবক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৯ এএম
ছবি : সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) হিম উৎসবে বেড়াতে এসে নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের একটি কক্ষে ঢুকে পড়েন এক বহিরাগত যুবক। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হল কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে। তার নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ (৩১), যিনি ‘যাযাবর পারভেজ’ নামে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানার বাসিন্দা। জানা গেছে, পারভেজ ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে তার সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যায়নি।
হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পারভেজ নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কপালে টিপ, পালাজো ও মুখে ঘোমটা দিয়ে রাত ১০টার দিকে হলের ভেতরে প্রবেশ করেন। তার পোশাক ও চলাফেরা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় কয়েকজন শিক্ষার্থী সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার জন্য হল সুপারকে অনুরোধ করেন। ফুটেজ পর্যালোচনার পর, হল সুপারসহ তারা পারভেজকে ওই নারী শিক্ষার্থীর কক্ষে আটক করে। পরে তাকে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। ক্ষুব্ধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা পারভেজকে শাড়ি ও টিপ পরিয়ে দেয়।
আটকের পর পারভেজ জানান, আমরা দুজন ভালো বন্ধু এবং আমাদের সাত বছরের বন্ধুত্ব। আমরা দুজনেই লালন ভক্ত এবং আমি তাকে বিয়ে দিয়েছি। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছিলাম এবং হলে আসার সময় কপালে টিপ পড়ে মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে প্রবেশ করি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী জানান, আমরা ভালো বন্ধু। হিম উৎসবে এসে সে থাকার জায়গা না পেয়ে হলে এসেছে। আমরা আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না। নারী শিক্ষার্থীর স্বামীকে ফোন করলে তিনি জানান, পারভেজকে তিনি চেনেন না। পরে ওই নারী শিক্ষার্থী তাকে শুধু ফেসবুক বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, হলের মেয়েরা সেই পুরুষের উপস্থিতি সম্পর্কে জানালে আমি হলের খালাকে সঙ্গে নিয়ে রুমে যাই। দরজা খুলে দেখি, তিনি খাটের ওপরে বসে আছেন। সঙ্গে সঙ্গে হল প্রভোস্টকে জানাই।
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হই। অভিযুক্তদের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা তদন্ত করা হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, হল কর্তৃপক্ষের খবর পাওয়ার পর আমি প্রক্টরিয়াল টিমকে পাঠাই। পরে ছেলেকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নারী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।