স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে
![Icon](https://www.jugerchinta24.net/uploads/settings/iconicon-2-1716039510.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
![তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে](https://www.jugerchinta24.net/uploads/2025/02/online/photos/tc-67a073d69f39a.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গুলশান লিংক রোড অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা সড়কে বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিতুমীর কলেজের মূল ফটকের সামনে ছয় শিক্ষার্থী টানা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের সামনে অন্য শিক্ষার্থীরা গোলবৃত্ত তৈরি করে সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
তবে আশ্চর্যের বিষয়, আন্দোলন চললেও এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য সেখানে উপস্থিত হননি।
অবরোধের বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন— তাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলবে এবং আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অ্যাম্বুলেন্স বা জরুরি রোগী পরিবহনের গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। কিছু সময় পর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও অবরোধ করা হবে।
রবিবার রাতে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছিলেন, সোমবার বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টানা ব্যারিকেড কর্মসূচি পালন করা হবে।
কোন কোন এলাকায় অবরোধ?
শিক্ষার্থীদের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকার চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধের আওতায় থাকবে—
গুলশান লিংক রোড
মহাখালী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক
রেল গেট
আমতলী মোড়
আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন ‘তিতুমীর ঐক্য’র উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান মুক্তার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন— রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছে। বিশ্ব এজতেমার কারণে আমরা রবিবার কর্মসূচি শিথিল করেছিলাম, কিন্তু এবার আর শিথিল করবো না। আমাদের আন্দোলনের কারণে কেউ বিরক্ত হলে তাদের কাছে আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি, তবে আমাদের দাবি ন্যায্য
শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে তিনটি স্পষ্ট দাবি জানিয়েছেন— তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে এবং উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আইন উপদেষ্টার হস্তক্ষেপের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
আন্দোলনের পটভূমি
গত কয়েক মাস ধরে শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। মিছিল, সড়ক ও রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান এবং ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
দাবির যৌক্তিকতা যাচাইয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছিল, তবে সেটির কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষার্থীরা হতাশ। তাই গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তারা আমরণ অনশনসহ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কী হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপ?
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সরকার এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে আন্দোলনের চাপ বাড়লে শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় অথবা সরকারের উচ্চপর্যায়ের কেউ আলোচনায় বসতে পারেন।
এখন দেখার বিষয়, সরকার শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং আন্দোলন কতটা বিস্তৃত হয়।