সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। ছবি : সংগৃহীত
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় প্রদান ও জাল রায় তৈরির জন্য সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম দণ্ডবিধির ২১৯ ও ৪৬৬ ধারায় এ মামলা করেন।
মামলার আবেদনে মোজাহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, বিচারপতি খায়রুল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় প্রভাবিত হয়ে এবং তার অবসর পরবর্তী ভালো পদায়নের লোভে ২০১১ সালের ১০ মে সংক্ষিপ্ত আদেশটি পরিবর্তন করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করার অভিপ্রায়ে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর উক্ত আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।
এর আগে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও জালজালিয়াতির অভিযোগে সদ্য আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান খায়রুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথির আদালতে ইমরুল হাসান নামে এক আইনজীবী এ আবেদন করেন। আবেদনে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৬, ৪৬৭, ৪৬৮ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান। পরবর্তী সময়ে মামলা গ্রহণের মতো উপাদান না থাকায় তা খারিজ করে দেন আদালত।
এদিকে এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ও আইনসচিবের কাছে নোটিশটি দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) চেয়ারপারসন ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।
নোটিশটিতে বলা হয়, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হঠাৎ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। এসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি বিচার বিভাগের সামনে আনা হয়।
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান অপ্রাসঙ্গিক ও অসাংবিধানিক বলেন। তার অবসরের ১৬ মাস পর রায় প্রকাশ হয়। এই রায় বাংলাদেশে কুৎসিত সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে।
খায়রুল হক দেশের সব অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার স্থপতি দাবি করে নোটিশে আরো বলা হয়, তিনি শুধু সংবিধানের বিধানই লঙ্ঘন করেননি, বরং সব ঘৃণার বিষবৃক্ষ, দুর্নীতি ও বর্বরতা রোপণ করেন। সব প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের মনোবল হ্রাস, বিচার বিভাগকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও পক্ষপাতদুষ্টে পরিণত করেন।
এসব অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে খায়রুল হকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে ৩ বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেয়া হয়।