৩ এমপি ও সাবেক মৎস্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৫৪ পিএম
৩ এমপি ও সাবেক মৎস্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু
দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা সম্পদ অর্জন এবং পাচারের অভিযোগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান ও আওয়ামী লীগের তিন সাবেক এমপির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তিন সাবেক সংসদ সদস্য হলেন— চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক এমপি সোলায়মান হক জোয়াদ্দার (ছেলুন), দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শেখর।
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সংস্থাটির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট থেকে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ হবে, সেই কর্মকর্তা আইন ও বিধি অনুসরণ করে অনুসন্ধান করবেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ফরিদপুরের মধুপুরে ভবন নির্মাণ, রাজউক-পূর্বাচলসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি ক্রয়; নিজ নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি, দি সিটি ব্যাংক পিএলসি এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে সঞ্চয়পত্র কেনার অভিযোগ রয়েছে।
তার স্ত্রী মির্জা নাহিদা হোসেনের নামে শান্তা দিগন্ত টাওয়ার-২, করবী, ফ্ল্যাট নং-৩ ই, ৩/৩ এ, পরিবাগ ঢাকাসহ ৪টি ফ্ল্যাট; এছাড়া দেশের বাইরে টাকা পাচার করে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন এবং কানাডায় একাধিক বাড়ি ক্রয়ের গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে দুদক।
অন্যদিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার আয় ও সম্পদের পরিমাণ ছিল বেশ কম। সেসময় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ২২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬৬ টাকার। ১৫ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ২০ গুণ। বর্তমানে নগদ টাকাসহ চার কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ৯৬৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক সোলায়মান হক।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে চুয়াডাঙ্গা সদরে ৩ তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল 'জোয়াদ্দার কুটির' নামীয় বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি কেনার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতির অর্থে প্রায় ৮০-১০০টি এসি/ননএসি বাসসহ ১৫-২০টি ট্রাক; তার স্ত্রী ও নিজ নামে সঞ্চয়পত্র; ০১টি প্রাডো গাড়িসহ তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।
দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিমের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ঢাকার উত্তরায় বাড়ি নং-১২,সেক্টর নং-১০, রোড নং-১২,উত্তরা মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির ওপর বাড়ি, ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট ; ০২টি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৪-৬৮৮৮ ও ঢাকা মেট্রো-ঘ-২১-৫১৬২) কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক। এছাড়া তার নামে দিনাজপুরের উথরাইল মৌজা, পুচকুর মৌজা, রামপুর মৌজা ও জালালপুর মৌজায় বিপুল পরিমাণ জমি; এছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।
আর মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শেখরের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে মাগুরা জেলার জাগলা নামীয় স্থানে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে অটোব্রিকস ফিল্ডের ব্যবসা; মাগুরা জেলার চাওলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত নগর পদ্দবিলে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে মৎস্য খামার; তার নিজ নামে ১০টি ট্রাক কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক। আত্মীয় স্বজনের নামে গাড়ি, মাগুরায় একাধিক বাণিজ্যিক ভবন, বিভিন্ন জায়গায় অনেক জমি এবং নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদে ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে শিখরের বিরুদ্ধে।