কিশোরগঞ্জে হাসিনা-কাদের-কামালসহ ১৬০ জনের নামে মামলা
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫২ এএম
শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি : সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুনুর রশীদ ও কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনসহ ১৬০ জনের নামে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বাজিতপুর কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক লোকমান মিয়া (২৫) বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল আদালত-৫-এ মামলাটি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুবাক্কার সিদ্দিক মিলন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১ নম্বর আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজকে রাজাকার বলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ২ নম্বর আসামি সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগ, যুবলীগ দিয়ে সারা দেশের ছাত্র সমাজকে পিটিয়ে সোজা করবেন মর্মে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ১ ও ২ নম্বর আসামির এই বক্তব্যের পর সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় বাজিতপুর উপজেলাতেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলতে থাকে।
এ ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতে ১ থেকে ৫ নম্বর আসামির নির্দেশনায় সারা বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর অবাধে গুলি চলে। এরই প্রেক্ষাপটে গত ৪ আগস্ট ১ থেকে ৫ নম্বর আসামির সঙ্গে ৬ নম্বর আসামি কিশোরগঞ্জ-৫ আসেনর সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের নির্দেশনায় বাজিতপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতার ওপর ৭ থেকে ১৭, ১৯, ২০, ২১, ২৮, ৩০, ৪২ নম্বর আসামিরা অস্ত্র হাতে বাজিতপুর বাজার থেকে গুলি করতে করতে বাজিতপুর আদালত-সংলগ্ন বটতলা মোড়ে দিকে যায়। সেখানে ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ নম্বর আসামি ব্যাপকভাবে গুলিবর্ষণ করেন এবং তাদের গুলিতে সাক্ষীরা গুলিবিদ্ধ হন।
এর মধ্যে আলী আকবরের গুলিতে ২ নম্বর সাক্ষী রিফাক গুরুতর আহত হয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। অন্যান্য সাক্ষীরাও প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এ ছাড়াও বাজিতপুর উপজেলার আরও ৫০-৬০ জন ছাত্র-জনতা গুরুতর আহত হন। অন্যান্য আসামিরা হাতে থাকা রামদা, চুরি, লাঠি, বল্লম, ইট ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়া ছাত্র-জনতা ও বিএনপি সমর্থিত মিছিলে মারপিটসহ বিভিন্নভাবে লুটপাট করেন। আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
কিশোরগঞ্জ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাড. জালাল উদ্দিন বলেন, এই মামলাটি আদালত গ্রহণ করে বাজিতপুর থানাকে এফআইয়ের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, গত জুলাই-আগস্ট মাসে স্বৈরাচার সরকার যেভাবে সাধারণ মানুষ ও ছাত্রজনতাকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি করার আদেশ দিয়েছেন সেটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমাদের কত শত-হাজার জনের বেশি মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। প্রতিটি মানুষ হত্যার জন্য এদের বিচার হওয়া জরুরি।