Logo
Logo
×

জাতীয়

বিশ্ব ডিম দিবস আজ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৯ এএম

বিশ্ব ডিম দিবস আজ

ফাইল ছবি

‘ডিমে পুষ্টি ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগ মুক্তি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার সারা বিশ্বের সঙ্গে দেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস। এবারের প্রতিপাদ্যে ‘ডিমে পুষ্টিকে’ সামনে আনা হলেও দেশের মানুষ উচ্চমূল্যের কারণে ডিম খেতে পারছে না। বর্তমানে ফার্মের মুরগির প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা করে, যা হালি হিসেবে ৬০ টাকা। ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের উদ্যোগে ১৯৯৬ সালে ভিয়েনায় প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্ব ডিম দিবস পালন শুরু হয়। সেখানে ডিমের শক্তি উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বিশ্বজুড়ে ডিমভক্তরা দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশে আলোচনা সভা ও র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সকাল ৯টায় আয়োজিত এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

দাম বেশি, কমছে ডিম খাওয়া 

রাজধানীর নাখালপাড়ার বাসিন্দা হারুনুর রশিদের বাসায় ডিমের ব্যবহার বেশি। তার ছোট সন্তান ডিম দিয়ে ভাত খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু গত দুই মাসে ডিমের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা হালিতে ওঠানামা করায় তিনি তা কেনা কমিয়েছেন। গত বুধবার তাকে মহল্লার একটি দোকান থেকে ডিম কিনতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আগে বাচ্চাকে দিনে দুইটা ডিম খেতে দিতাম। এখন সেটা একটায় ঠেকেছে। ডিমের দাম বেড়ে ৬০ টাকা হালিতে উঠেছে। অন্যান্য শাকসবজির দামও বেশি। তার ভাষায়, যা আয় হয় তা দিয়ে শহরে ছোটখাটো বাসা নিয়ে থাকি। গ্রামে বাবা-মা, ভাই-বোনের পড়ালেখার জন্য টাকা পাঠাতে হয়। কিছু টাকা বাঁচাতে পারলে তাদের জন্য সুবিধা। কিন্তু এখন গরিবের শেষ ভরসা ডিমের দামও বেশি। তাই বাচ্চাকেও ডিম কম খেতে দিতে হচ্ছে।

একই মহল্লার শাহজাহান হোসেনের বাসায় ১৫ দিনে অন্তত তিন দিন ডিম খাওয়া হতো। বর্তমানে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তা দুদিনে নেমে এসেছে। তা ছাড়া বাসায় ডিমের তৈরি অন্যান্য খাদ্য তৈরির পরিমাণও কমেছে। তিনি বলেন, আগে প্রায় দিন সন্ধ্যায় লুডলস খাওয়া হতো ডিম দিয়ে। এখন সেখানে দুয়েক টুকরা আলু ও পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি হচ্ছে। তা ছাড়া ডিমের পুড়িংও আমাদের বাসায় প্রিয় একটি খাবার। এটির তৈরির পরিমাণও কমেছে। শাহজাহান হোসেন বলেন, আমার পরিচিত অনেকেই বর্তমানে এই পথ অনুসরণ করছেন। বিষয়টি শুধু এই না যে, আমরা ডিম কম খাচ্ছি বরং অনেক চাহিদাই এখন অপূর্ণ রেখে দিতে হচ্ছে। 

ডিমের উৎপাদন কত

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১১ বিলিয়ন; যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এদিকে ২০২২ সালের হিসাবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ডিম উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে রয়েছে চীন ৫৮৩ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন। তার পরের স্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া ১৩২ দশমিক ৪ বিলিয়ন। বাংলাদেশ ২৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন।

কী বলছেন কর্মকর্তারা

ডিমের দাম ক্রেতাদের নাগালের আওতায় আনতে আমদানি ছাড়া আর কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, বুধবার প্রান্তিক পর্যায়ের ডিম ও মুরগির খামারিদের নিয়ে বৈঠক করে তাদের সমস্যাগুলো শোনা হয়েছে। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেব। বিশেষ করে টেলিফোন বা মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রিত হয়। এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সেখানে প্রাণিসম্পদের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। বিশেষ করে ডিমের ক্ষেত্রে খামারি থেকে ভোক্তা পর্যন্ত আসতে চার-পাঁচবার হাতবদল হয়। এটি কীভাবে কমিয়ে আনা যায় আমরা তা নিয়ে কাজ করব। এই হাতবদলের ফলে বিভিন্ন স্থানে দামে বিরাট প্রভাব পড়ে। আর ডিমের মূল্য নির্ধারণে প্রান্তিক পর্যায়ের কয়েকজন প্রতিনিধি যাতে থাকে, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ভোক্তা অধিদপ্তরের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরও নিবিড়ভাবে কাজ করবে। যাতে বাজারটা সঠিকভাবে তদারকি করা হয়। আর এই সময়টায় এমনিতেই ডিমের দাম বেশি থাকে। সবজির উৎপাদন কম থাকায় বাজারে ডিমের ওপর বেশি চাপ থাকে। এ কারণেও ডিমের দাম অনেকটা বেড়ে যায়। আশা করি কিছু দিনের মধ্যেই দাম কমে আসবে। 

ডিমের ক্ষেত্রে মুরগির বাচ্চার দাম একটি বড় বিষয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর যে বাচ্চার দাম ৩০ টাকা ও ৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সেটি ১০০ বা ১২০ টাকায় বিক্রি হয়। এক্ষেত্রে আপনাদেরও কিছু হ্যাচারি আছে, সেখানে বাচ্চা উৎপাদন করবেন এবং আমদানির সুযোগ দেবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা নতুন করে দেখলাম কোনো কোনো করপোরেট কোম্পানি থেকে বাচ্চার সঙ্গে তার খাবারও কিনতে হয়। এতে বাচ্চার দামও বেড়ে যায়। এজন্য আমরা করপোরেট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বসে বিষয়টি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে কাজ করব। আর আমাদের খামার ও হ্যাচারিতে উৎপাদন বাড়াব। প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে বিক্রির হার বাড়াব। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, ফিডের কাঁচামালে যেসব শুল্ক আছে, সেগুলো আরও কমিয়ে আনতে আহ্বান জানিয়েছি। তা ছাড়া যেসব ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক আমদানি করতে হয়, সেগুলোর দাম কীভাবে কমানো যায় তা নিয়েও কাজ করা হবে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন