পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মান পেয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:৪১ পিএম
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজের সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতুকে ‘গর্বের প্রতীক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন বাংলাদেশকে যথাযথ মূল্যায়ন করছে।
তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশ শুনলেই মানুষ সমীহ করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। বাংলাদেশের জনগণ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজের সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
গত দুই বছরে পদ্মা সেতুর টোল প্রাপ্তিতে সন্তষ্টি প্রকাশ করে সরকার প্রধান বলেন, আমি টাকার অংক দিয়ে এটি বিচার করব না। কারণ এ সেতু আমাদের গর্বের সেতু। এটা টাকার অংক দিয়ে বিচার করার নয়।
বিশ্ব ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি শুধু এটুকু বলতে চাই এ একটা সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে অন্তত সেই মর্যাদা দিয়েছে, আগে যারা কথায় কথায় আমাদের ওপর খবরদারি করত, আর ভাবখানা ছিল এরা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারে না, সে মানসিকতাটা বদলে গেছে। মানুষ এখন গর্ব করে আন্তর্জাতিকভাবে বুক ফুলিয়ে চলতে পারে। এটিই সব থেকে বড় পাওয়া।
পদ্মা সেতু নির্মাণ বন্ধে দেশী ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক বাধা অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের জনগণের টাকায় সেতুটি নির্মাণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন সবাই না করেছে আর আমি বলেছি আমি করব। সে সময় দেশের জনগণ আমার সঙ্গে ছিল। আর আজকে সে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করতে পেরেছি যা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। আর কৃতজ্ঞ আমার দেশবাসীর কাছে।
তিনি বলেন, এই পদ্মা সেতুটা একটি জটিল স্ট্রাকচার। কারণ আমাজনের পর সব থেকে খরস্রোতা হচ্ছে এ পদ্মা নদী। এই জটিল পরিস্থিতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কখনো নদীর পার ভেঙেছে, নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে, একে একে সব কিছু অতিক্রম করে আমরা এ সেতুটি নির্মাণ করেছি।
প্রধধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে দুর্যোগে মৃত্যুবরণকারী এবং সেতুর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন ও প্রয়াত, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেন এবং প্রকৌশলী, গবেষক, ও বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সেই পদ্মা নদীকে দুই কূলে বেঁধে দেয়া আর এ সেতু নির্মাণ করা, এই জটিল কাজের সঙ্গে যারা জড়িত সেই সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নিবেদিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশী-বিদেশী প্রকৌশলী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ, নিরাপত্তার তদারকিতে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা এবং নির্মাণ শ্রমিক তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাতেই আজ আমি এখানে এসেছি।
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্ব করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম প্রকল্প সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।