Logo
Logo
×

জাতীয়

আওয়ামী সরকারের এমপিদের নামে আনা গাড়ি নিয়ে এনবিআরের নতুন সিদ্ধান্ত, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম

আওয়ামী সরকারের এমপিদের নামে আনা গাড়ি নিয়ে এনবিআরের নতুন সিদ্ধান্ত, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

চট্টগ্রাম বন্দরের কারশেডে পড়ে আছে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা সাবেক এমপিদের দামি গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী সরকারের সংসদ সদস্যদের নামে আনা ৪২টি পাজেরো গাড়ি নিলাম না করে আমদানিকারকদের কাছে ছাড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আওতাধীন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। এতে অন্তত ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের আশা করা হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ অতিরিক্ত শুল্ক প্রযোজ্য হওয়ার কারণে গাড়িগুলো বিক্রি না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই গাড়িগুলোর মধ্যে ২৪টি গাড়ি ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ছাড়ের জন্য আমদানিকারকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সাড়ে আট কোটি টাকা শুল্ক পরিশোধ করে এসব গাড়ি ছাড় করা যাবে। তবে গত পাঁচ মাস ধরে এই গাড়িগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডে পড়ে রয়েছে এবং এমপিরা পালিয়ে যাওয়ার পর এর ছাড়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, যদি আমদানিকারকরা শুল্ক পরিশোধ করেন, তবে গাড়িগুলো ছাড় করা হবে, অন্যথায় নিলাম হতে পারে। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর গাড়িগুলো বন্দরে আনা হয়, কিন্তু আইন অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে ছাড় না করায় চট্টগ্রাম বন্দরের কর্তৃপক্ষ ২৪টি ল্যান্ড ক্রুজার বাই পেপার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে হস্তান্তর করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে জায়গাটি খালি করা, তাই নিলাম বা ছাড়ের যেকোনো এক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।”

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছেন, "যেহেতু এমপিরা নেই, তাহলে গাড়ির আমদানিকারক কে?" এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত, কারণ নিলাম না করে আমদানিকারকদের কাছে গাড়ি হস্তান্তর নতুন আইনি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস আহমেদ বলেন, "যদি এনবিআরের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, তবে বিডারদের কোনো মন্তব্য করার জায়গা নেই।"

চট্টগ্রামের মেসার্স আর রেজা ট্রেডার্সের মালিক সৈয়দ ইউনুছ খান বলেন, "এমপিরা যখন নেই, তখন গাড়িগুলো স্বাভাবিক নিয়মে নিলামে বিক্রি হওয়া উচিত।"

জাপান থেকে আনা প্রতিটি গাড়ির আমদানী মূল্য ১ থেকে দেড় কোটি টাকা। শুল্কসহ মোট মূল্য ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকায় পৌঁছায়, যা বাজারে বিক্রি করা কঠিন বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, "১০ কোটি টাকার মূল্য দেখিয়ে এসব গাড়ি ছাড় করানোর সম্ভাবনা কম। দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।"

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন সংসদ সদস্যরা, যেমন সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমন, জুলাই মাসে গাড়িগুলো ছাড় করে নিয়েছেন। তবে, অন্যান্য সংসদ সদস্যদের গাড়ি এখনও বন্দরে আটকা পড়েছে, যার মধ্যে তারানা হালিম এবং জান্নাত আরা হেনরীর গাড়িও অন্তর্ভুক্ত।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন