Logo
Logo
×

জাতীয়

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫২ পিএম

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ

ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে নানা অভিযোগের মুখোমুখি। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনে আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়া, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতি, নির্বাচনি প্রচারে আওয়ামী লীগের নেতাদের সম্পৃক্ত করা, এবং গুম হওয়া এক আইনজীবীর স্ত্রীকে হয়রানি করা। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট গুম হয়েছিলেন জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমান। এ বিষয়ে ২০১৭ সালে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক টিউলিপ সিদ্দিককে প্রশ্ন করেছিলেন। ওই সাংবাদিক মনে করেছিলেন, টিউলিপ সিদ্দিক যদি শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাহলে আরমানের মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হতে পারে।

ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, আমি হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের একজন লেবার এমপি। আমি একজন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য। খুব সাবধান থাকবেন। আমি বাংলাদেশি নই এবং আপনি যার কথা বলছেন, তাদের মামলা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আমার বক্তব্য এখানেই শেষ। টিউলিপ বিভিন্ন সময় দাবি করেছেন, তিনি কখনোই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কথা বলেননি। তবে স্কাই নিউজের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিনিধি জন ক্রেইগ লিখেছেন, টিউলিপের এই দাবি পুরোপুরি সত্য নয়। জন ক্রেইগের মতে, বিভিন্ন সময় টিউলিপ বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কিত বিষয়ে মন্তব্য করেছেন বা তার কার্যকলাপে সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ পেয়েছে।

তিনি তার প্রতিবেদনে এ নিয়ে পুরো ঘটনা তুলে ধরেছেন। ২০০৯ সালের ১১ জানুয়ারি ‘টিউলিপ সিদ্দিক, ব্লুমসবারি এবং কিংস ক্রসের লেবার পার্টি অ্যাকশন টিমের সদস্য’ শিরোনামের ব্লগটিতে সমর্থকদের উদ্দেশে টিউলিপ লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশে সত্যিই ব্যস্ত ছিলাম। আমি ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনার নির্বাচন-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের ছবি তুলেছি। আমার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ উপাদান ছিল শেখ হাসিনার বক্তব্য। হাসিনার প্রশংসায় ওই ব্লগে টিউলিপ আরো লিখেছেন, যিনি (হাসিনা) জোর দিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে দেশের কল্যাণে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এটা কোনও গোপন বিষয় নয় যে, অতীতের সরকারগুলো অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে একসঙ্গে কাজ করেনি এবং আমাদের এই ধারা পরিবর্তন করতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ সমর্থন করে না। আশা করি যে এই বছর একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হবে। সেইসঙ্গে টিউলিপ যোগ করেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রেস কনফারেন্সে আমার একটি অ্যাকশন শট রয়েছে। আমি কী বলছিলাম তা মনে নেই, সম্ভবত এটি ততটা আকর্ষণীয় ছিল না।’

২০০৯ সালের ২১ জানুয়ারি একটি পোস্টে যুক্তরাজ্যের নগর মন্ত্রী (টিউলিপ সিদ্দিক) লিখেছিলেন, ‘নির্বাচনের দিনে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার গাড়িতে ভ্রমণ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী!) ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকায় যান। গাড়ি থেকে নেমে সংসদীয় প্রার্থী এবং ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন। তার খালার গাড়িতে ভ্রমণের বর্ণনা দিয়ে টিউলিপ লিখেছেন, ‘আপনি এখানে নির্বাচনের দিন থেকে আমার সমস্ত ছবি দেখতে পাবেন... কিছু ছবির খারাপ মানের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি তার গাড়ির ভেতর থেকে ছবি তুলছিলাম যা আসলে বেশ কঠিন কাজ! আপনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি ছবিও দেখতে পাবেন। আমি ছবিটি তুলেছিলাম কারণ শেখ হাসিনা আমাকে বলেছিলেন যে, এই কারাগারটিতে তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় কেটেছে। কার্যত এটি ছিল তার দ্বিতীয় বাসা। কারণ তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহু বছর ধরে এই কারাগারে আটক ছিলেন। প্রতি সপ্তাহান্তে পরিবারের বাকি সদস্যদের সাথে খালা তাকে দেখতে আসতেন, তাই এটি একটি খুব পরিচিত ল্যান্ডমার্ক ছিল।’

এর আগে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘বিজয়!’ শিরোনামে সিদ্দিক লিখেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জিতেছে! শেখ হাসিনা নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী! আমি আনন্দিত! আমি সারাদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রচারণায় ছিলাম তাই বেশি কিছু লেখার শক্তি আমার নেই, কিন্তু আগামীকাল আমি লিখবো। তবে, আমি কয়েকটি ছবি আপলোড করা থেকে নিজেকে থামাতে পারছি না’। একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা- ‘এটি হলো শেখ হাসিনার মুখ, ফলাফল শোনার ঠিক আগে। ওই আসনে আওয়ামী লীগের কঠোর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে শুনে তিনি এখানে এসেছেন।’

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
Email: [email protected]

অনুসরণ করুন