ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৪ এএম
ছবি : সংগৃহীত
বহুল আলোচিত ছাগলকাণ্ডে জড়িত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান এবং তার প্রথম স্ত্রী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি দল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তবে কোন মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
এনবিআরের সাবেক এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একাধিক মামলা করেছে। সর্বশেষ ৬ জানুয়ারি, তাঁদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ অনুসারে, মতিউর রহমান, তাঁর প্রথম স্ত্রী এবং তাঁদের সন্তানরা মিলে ১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
এর মধ্যে প্রথম মামলার আসামি করা হয় লায়লা কনিজ ও মতিউর রহমানকে। মামলার এজাহারে বলা হয় আসামি লায়লা কানিজ ১৩ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে তার মেয়ে ফারজানা রহমানের নামে ২ কোটি ৪৫ লাখ গোপন ও ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে দ্বিতীয় মামলায়। ওই মামলায় মতিউর রহমানকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
আর তৃতীয় মামলায় প্রথম ঘরের ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন ও ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও মতিউরকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
এর আগে, ১৫ ডিসেম্বর, মতিউর ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর (শাম্মী আখতার শিবলী) বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা দায়ের করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ১১ কোটি টাকারও বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
ছাগলকাণ্ডের সূচনা:
২০২৪ সালের কোরবানির ঈদে, তাঁদের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেন। এতে মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সম্পদ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠে।
দুদকের অনুসন্ধান:
২০২৪ সালের ৪ জুন থেকে দুদক তাঁদের বিপুল সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে। এতে ৬৫ বিঘা জমি, ৮টি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক হিসাব, এবং মোবাইল আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।
আইনি পদক্ষেপ:
২৪ জুন: মতিউর এবং তাঁর পরিবারের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা।
২ জুলাই: সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিশ।
২৯ আগস্ট: সম্পদ বিবরণী দাখিল।
এই ঘটনা দেশের দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং জনমনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।