বকেয়া পরিশোধের সময়সীমা বেঁধে দিল আদানি, জরিমানা মওকুফের প্রস্তাব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৫৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আগামী জুন মাসের মধ্যে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলে তার উপর ধার্য জরিমানা (সারচার্জ) মওকুফের প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় কোম্পানি আদানি পাওয়ার লিমিটেড (এপিজেএল)। বকেয়া বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা মেনে চলতে হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি এ প্রস্তাব পিডিবি চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রেসিডেন্ট ও আদানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এম আর কৃষ্ণ রাও। চিঠিতে বলা হয়, জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৫-এর মধ্যে চলমান বকেয়া পরিশোধের জন্য পিডিবিকে মাসিক বিল পরিশোধ করতে হবে এবং ৩০ জুন ২০২৫-এর মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ সাপেক্ষে জরিমানা মওকুফের বিষয়টি কার্যকর হবে।
আদানি পাওয়ার জানায়, তাদের তীব্র আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং পিডিবি যেন দ্রুত বকেয়া পরিশোধ করে, সে জন্যই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি পিডিবির সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর বকেয়া বিল থাকার কারণে আদানি তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ পেয়ে আসছিল।
গত আগস্টে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে ১৪০০-১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেও বকেয়ার অর্থ না পাওয়ায় তারা ৩১ অক্টোবর একটি ইউনিট বন্ধ করে দেয়। এরপর নভেম্বর মাসে সরবরাহ কমে ৭০০-৭৫০ মেগাওয়াট-এ নেমে আসে।
আদানির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকারকে প্রতি মাসে ৯০-১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার কথা থাকলেও, গত কয়েক মাসে তারা মাত্র ২০-৫০ মিলিয়ন ডলার করে দিয়েছে। তবে শীত মৌসুমে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় সরবরাহের পরিমাণও কমিয়ে দিয়েছে আদানি।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই পরিস্থিতিতে আদানি পাওয়ার জরিমানা মওকুফের প্রস্তাব দিয়ে বকেয়া পরিশোধে নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করেছে।
পিডিবিকে জরিমানা এড়াতে জুন ২০২৫-এর মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। তবে বর্তমান আর্থিক সংকট এবং বিদ্যুৎ খাতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জের কারণে এটি কতটা বাস্তবায়নযোগ্য, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।