সারের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দোসর ও ডিলার চক্র
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিব্রত করতে এবং সারের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে একটি অসাধু চক্র সক্রিয় হয়েছে। এতে বর্তমান সরকারের সারের ন্যায্য বিতরণ নিশ্চিত করার উদ্যোগ ব্যাহত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং অধিশাখা থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, বরাদ্দকৃত নন-ইউরিয়া সার ডিলাররা সরাসরি আমদানিকারকদের থেকে উত্তোলন করবেন। ক্ষেত্রবিশেষে ডিলারের অনুমোদিত কর্মচারীও সার উত্তোলন করতে পারবেন, তবে তা কঠোর নিয়মের আওতায় হবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে সার উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয় এবং সারের বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে একটি সিন্ডিকেট সারের বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) নির্বাহী সচিব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মোবাইল বার্তার মাধ্যমে ডিলারদের মোকামকেন্দ্রিক মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে সার উত্তোলনের নির্দেশনা দিয়েছেন।
সার বিতরণের এই অব্যবস্থাপনার ফলে কালোবাজারি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিসিআইসি ডিলারদের বরাদ্দ করা সার মধ্যস্বত্বভোগীরা কিনে প্রতি বস্তায় ৪০০-৫০০ টাকা বেশি দামে অন্য জেলায় বিক্রি করছে। ফলে, একদিকে সারের সংকট দেখা দিচ্ছে, অন্যদিকে সাধারণ কৃষকদের বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে।
গত ১ ডিসেম্বর যশোরের অভয়নগর থানায় ৪টি গাড়ি ডিএপি সার আটক করা হয়।
১৫ জানুয়ারি এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পাচারের সময় ৭টি গাড়ি ডিএপি সার আটক করে যশোর জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এই সারের চালান বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তবে সিন্ডিকেট পুরোপুরি নির্মূল করতে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা ও ডিলারদের কঠোর তদারকি প্রয়োজন।
বিএফএ-এর একসময়ের সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটনের সময়ে এই সংগঠনটির বিভিন্ন সুবিধাভোগী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিএডিসি ও বিসিআইসির প্রায় তিন লাখ মেট্রিক টন সরকারি সার আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পোটনের সচিব ছিলেন রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, যিনি বর্তমানে বিএফএ-এর নির্বাহী সচিব এবং সিন্ডিকেটের অন্যতম অভিযুক্ত।
সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে প্রতিটি জেলার জন্য বরাদ্দকৃত সার নির্ধারিত মাসেই উত্তোলন নিশ্চিত করতে হবে। ডিলাররা এই শর্ত লঙ্ঘন করলে তাদের ডিলারশিপ বাতিল করার মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিএফএ-এর নির্বাহী সচিব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের কাছে এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সারের বাজারের এই অস্থিতিশীলতা দূর করতে সরকারের আরও কার্যকর পদক্ষেপ এবং শক্তিশালী তদারকি প্রয়োজন।