চুরি যাওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি সহায়তা চান ড. ইউনূস
যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম
দাভোসে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ থেকে চুরি যাওয়া শত শত বিলিয়ন ডলারের অর্থ ফেরত আনতে বিশ্বের নেতৃবৃন্দের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস জার্মানির ফেডারেল চ্যান্সেলারি ও বিশেষ কার্যবিষয়ক মন্ত্রী ওলফগ্যাং শমিড, বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পাইয়েটংতার্ন শিনাওয়াত্রা, সুইস ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিস, দুবাই সংস্কৃতি ও শিল্প কর্তৃপক্ষের চেয়ারপারসন শেখা লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স চিসেকেদি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন জলবায়ু দূত জন কেরি এবং যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী জার্মান মন্ত্রী ওলফগ্যাং শমিডকে বাংলাদেশে অর্থ পাচারের তথ্য এবং তা ফেরত আনার প্রচেষ্টার বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে একটি অ্যাসেট রিকভারি কমিটি ও টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যা প্রথম পর্যায়ে শীর্ষ ২০ মানি লন্ডারারের সম্পদ উদ্ধারে কাজ করবে।
ড. ইউনূস বলেন, "আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, তখন একটি পরিষ্কার বাংলাদেশের কথাও বলি।" তিনি জার্মান সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।
জার্মান মন্ত্রী জানান, একটি নতুন জার্মান ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল এপ্রিলে বাংলাদেশ সফর করবে।
জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে ড. ইউনূস আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে দিনের আলোয় সম্পদ লুটপাটের ঘটনা তদন্ত করেন।
সুইস ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিসের সঙ্গে বৈঠকে জলবায়ু অর্থায়ন এবং সুন্দরবনে কার্বন সংরক্ষণ উদ্যোগে সুইজারল্যান্ডের সহায়তা চান ড. ইউনূস।
বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ ও কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স চিসেকেদির সঙ্গে আলোচনায় জানা যায়, মাইক্রোক্রেডিট কর্মসূচির মাধ্যমে কঙ্গোর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনাঞ্চলের পরিধি দ্বিগুণ হয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক সম্পর্ক
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পাইয়েটংতার্ন শিনাওয়াত্রার সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানে তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের অনবরত প্রবেশের কারণে বাংলাদেশ বড় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।
থাই প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড যুবসমাজের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
সাক্ষাৎকালে ড. ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন তার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, এবং জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম।
ডব্লিউইএফের এই সম্মেলনটি বৈশ্বিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস।