সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম
সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ
সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারি, অর্থপাচার, ২০ বছর অবৈধভাবে চেয়ারম্যান পদ আঁকড়ে ধরে রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ব্যাংকটিতে নতুন বোর্ড গঠন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ বসানোরও দাবি জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি অ্যাক্টিভিস্ট ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস এ-সংক্রান্ত একটি অভিযোগ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠান। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেও পাঠানো হয়।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালে আলমগীর কবির সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়াম্যানের দায়িত্বে আসেন। এর পর থেকে টানা ২০ বছর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এতদিন দায়িত্বে থেকে অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছেন। পাশাপাশি অন্য পরিচালক ও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও নিজ লোকদের ঋণ দেয়া এবং চলতি ঋণের সুদ মওকুফ করে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটান। এতে কাজ না হওয়ায় অন্য পরিচালকরা বোর্ড সভায় উপস্থিত হওয়া বন্ধ করে দেন। এ সুযোগে আলমগীর কবিরের অনিয়মের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। ব্যাংকটিতে এখন নিয়মের কোনো বালাই নেই বলে অভিযোগে তুলে ধরা হয়।
জানা যায়, ঋণ অনিয়মের বাইরে ব্যাংকের কেনাকাটা, শাখা সম্প্রসারণ, শাখা ইন্টেরিয়র, ব্যাংকের বুথ বসানো এবং সফটওয়্যার সরবরাহের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চেয়ারম্যান।
দেশে ও বিদেশে আলমগীরের হাজার কোটি টাকার সম্পদ অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, দুর্নীতি ও কারসাজির মাধ্যমে আলমগীর কবির দেশ ও দেশের বাইরে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলছেন। এসব অর্থ কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে পাচার করেছেন।
সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
এছাড়া কানাডার বেগমপাড়া, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার আমপাং এলাকায় তার বাড়ি রয়েছে। দুবাইয়ে বিলাসবহুল হোটেল ও বার রয়েছে। তাছাড়া ঢাকার গুলশান অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। গাজীপুরে রয়েছে বাড়ি। শ্রীপুর, ভাওয়াল ও কাঁচপুরে তার অন্তত ১৫০ বিঘা জমি রয়েছে বলে অভিযোগে তুলে ধরা হয়। ব্যাংকের টাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয় অভিযোগে বলা হয়, আলমগীর কবির চেয়ারম্যান পদে থেকে ব্যাংকের টাকায় ন্যাশনাল লাইফ ইস্যুরেন্স, বে লিজিং ও এশিয়া ইস্যুরেন্সের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন। এসব শেয়ার কেনার উদ্দেশ্য ছিল ওইসব প্রতিষ্ঠান দখল করা।
এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বা উপদেষ্টার পদ দখল করেন আলমগীর কবীর। এর মাধ্যমে তিনি একটি দুষ্টু চক্র বা সিন্ডিকেট তৈরি করেন, যে সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের কারণে তিনি লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংকটি। তাছাড়া এ দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে অনৈতিকভাবে মোটা অঙ্কের ঋণও দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারি, অর্থপাচার, ২০ বছর অবৈধভাবে চেয়ারম্যান পদ আঁকড়ে ধরে রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ব্যাংকটিতে নতুন বোর্ড গঠন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ বসানোরও দাবি জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি অ্যাক্টিভিস্ট ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস এ-সংক্রান্ত একটি অভিযোগ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠান। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেও পাঠানো হয়।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালে আলমগীর কবির সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়াম্যানের দায়িত্বে আসেন। এর পর থেকে টানা ২০ বছর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এতদিন দায়িত্বে থেকে অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছেন। পাশাপাশি অন্য পরিচালক ও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও নিজ লোকদের ঋণ দেয়া এবং চলতি ঋণের সুদ মওকুফ করে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটান। এতে কাজ না হওয়ায় অন্য পরিচালকরা বোর্ড সভায় উপস্থিত হওয়া বন্ধ করে দেন। এ সুযোগে আলমগীর কবিরের অনিয়মের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। ব্যাংকটিতে এখন নিয়মের কোনো বালাই নেই বলে অভিযোগে তুলে ধরা হয়।
জানা যায়, ঋণ অনিয়মের বাইরে ব্যাংকের কেনাকাটা, শাখা সম্প্রসারণ, শাখা ইন্টেরিয়র, ব্যাংকের বুথ বসানো এবং সফটওয়্যার সরবরাহের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চেয়ারম্যান।
দেশে ও বিদেশে আলমগীরের হাজার কোটি টাকার সম্পদ অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, দুর্নীতি ও কারসাজির মাধ্যমে আলমগীর কবির দেশ ও দেশের বাইরে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলছেন। এসব অর্থ কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে পাচার করেছেন।
এছাড়া কানাডার বেগমপাড়া, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার আমপাং এলাকায় তার বাড়ি রয়েছে। দুবাইয়ে বিলাসবহুল হোটেল ও বার রয়েছে। তাছাড়া ঢাকার গুলশান অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। গাজীপুরে রয়েছে বাড়ি। শ্রীপুর, ভাওয়াল ও কাঁচপুরে তার অন্তত ১৫০ বিঘা জমি রয়েছে বলে অভিযোগে তুলে ধরা হয়। ব্যাংকের টাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয় অভিযোগে বলা হয়, আলমগীর কবির চেয়ারম্যান পদে থেকে ব্যাংকের টাকায় ন্যাশনাল লাইফ ইস্যুরেন্স, বে লিজিং ও এশিয়া ইস্যুরেন্সের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন। এসব শেয়ার কেনার উদ্দেশ্য ছিল ওইসব প্রতিষ্ঠান দখল করা।
এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বা উপদেষ্টার পদ দখল করেন আলমগীর কবীর। এর মাধ্যমে তিনি একটি দুষ্টু চক্র বা সিন্ডিকেট তৈরি করেন, যে সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের কারণে তিনি লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংকটি। তাছাড়া এ দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে অনৈতিকভাবে মোটা অঙ্কের ঋণও দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিয়ম লঙ্ঘন করে সুদ মওকুফ আলমগীর কবিরের অভিযোগ থেকে জানা যায়, আলমগীর কবির তার নিকটাত্মীয়ের মালিকানাধীন লুব-রেফ বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে প্রায় ৫৪ কোটি টাকার বেশি সুদ মওকুফ করে দিয়েছেন। প্রথমে লুব রেফের ঋণ সাউথইস্ট ব্যাংক কিনে নেয়। ব্যাংক সেই টাকা একেবারে পরিশোধ করলেও লুব রেফের অ্যাকাউন্ট সন্দেহ এড়াতে ছোট ছোট পরিমাণে এফডিআর হিসাবে জমা দেয়া হয়। ঋণের পুরো সুদ একবারে মওকুফ না করে তা অল্প করে মওকুফ করা হয়, যাতে ব্যাংকের বোর্ডে সন্দেহ না হয়।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি সুদ মওকুফের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিপোর্ট করতে হয়। আলমগীর কবির ইন্টারেস্ট রেপিড নামে এক পদ্ধতি করে লে মেরিডিয়েনের ঋণের সুদ মওকুফ বা ওয়েভার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্টিং এড়িয়ে গেছেন, যা ব্যাংক খাতের নিয়ম পরিপন্থি। অনিয়মের মাধ্যমে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ঋণ বিতরণ সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির গ্রাহকদের মধ্যে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেন।
এসব ঋণের বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে পাঁচ বছরে কোনো সুদ দিতে হবে না বলে সুবিধা দিয়েছেন। অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, তিনি কেয়া গ্রুপের ৯০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেন। কেয়া গ্রুপকে সাউথইস্ট ব্যাংকের সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট অতিক্রম করে। অতিক্রম করা সত্ত্বেও তিনি ঋণটি দেন মূলত শত কোটি টাকার কমিশনের বিনিময়ে। এছাড়া ফাহমী নিটরে ৩০০ কোটি টাকা ও মাহাবুব স্পিনিংয়ে ১৫০ কোটি টাকার ঋণ বেআইনিভাবে বিতরণ করেন।
প্রকৃত মূল্যের অতিরিক্ত দামে কেনা হয় সিআরএম জানা যায়, সাউথইস্ট ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার জন্য প্রায় ৫০০টি ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) বসানো হয়। এসব মেশিন ছিল খুবই নিম্নমানের। এছাড়া এসব মেশিন স্বাভাবিক বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্যে কেনা হয়। এক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্যের অতিরিক্ত অর্থ ওভার ইনভয়েসিংয়ে মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা তিন কোম্পানিতে পাঠানো হয়েছে। এগুলো হলোÑআরঅ্যান্ডএন ট্রেড হোল্ডিংস প্রাইভেট লিমিটেড, ই-এক্সচেঞ্জ সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড ও আরঅ্যান্ডএন মেরিন অ্যান্ড শিপ ট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড। এসব প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ১০০ অর্চার্ড রোড, ০১০৩ সি এবং কনকর্ড হোটেল অ্যান্ড শপিং মল ২৩৮৮৪০। এতে প্রায় ২০ কোটি টাকার অধিক অর্থ শেয়ার মানি/ইকুইটি হিসেবে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
এছাড়া আলমগীর কবির সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত দুটি সিডিএমএটিএম মেশিন বসান। প্রতিটি সিডিএম, এটিএম মেশিন শুধু জারা জামান টেকনোলজিনের কাছ থেকে কেনা হয়। প্রত্যেকটি এটিএমের জন্য ৮ দশমিক ২ লাখ টাকা থেকে ২৬ দশমিক ৯৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিল করা হয়েছে, যা স্বাভাবিক বাজারদরের তুলনায় দু-তিনগুণ বেশি।
এ বিষয়ে জানতে সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলেও উত্তর দেননি। পরবর্তীকালে ব্যাংকটির প্রধান কর্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ব্যাংকটির জনসংযোগ কর্মকর্তা তানভীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।