দুদকের পরিচালক সায়েমুজ্জামানকে প্রত্যাহার ও বদলি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৪ এএম

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্নীতি তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে প্রত্যাহারের পর বদলি করা হয়েছে। তাকে বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে সরিয়ে NIS এবং UNCAC Focal Point বিভাগের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার স্থলে পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম দায়িত্ব পেয়েছেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুদকের প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক আজিজুল হক স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা গেছে।
তদন্ত থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের লকার সম্পর্কিত তদন্তের দায়িত্ব থেকে সায়েমুজ্জামানকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিয়ে লেখালেখির কারণে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, "তাকে তদারককারীর দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য প্রকাশের কারণে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত লকার নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। তবে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ২৫ কর্মকর্তার নামে কোনো লকার পাওয়া যায়নি বলে জানান সায়েমুজ্জামান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তি ও চিঠি
দুদক পরিচালকের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠি পাঠিয়েছে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের কাছে।
চিঠিতে বলা হয়, সায়েমুজ্জামানের মন্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নীতিমালার পরিপন্থি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের পরিচালক স্বাক্ষরিত চিঠির সঙ্গে তার বিভিন্ন মন্তব্যের স্ক্রিনশট সংযুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের লকার অভিযান ও অনুসন্ধান
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন লকারে অনুসন্ধান চালায় দুদক। এর আগে, গত ২ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রাখা কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত লকার সাময়িকভাবে ফ্রিজ করার জন্য গভর্নরকে চিঠি দেয় সংস্থাটি।
এর আগে, ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি নিয়ে দুদক টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। সেখানে তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ এবং ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়। এসব সম্পদের উল্লেখ তার আয়কর রিটার্নে ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ কর্মকর্তার নজরদারি
বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জন, শেয়ারবাজার থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এবং রিজার্ভ চুরিসহ নানা অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান ২৫ কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে দুদক।
তদন্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে মোট ২৭২টি সেফ ডিপোজিট লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে। আদালতের অনুমোদন নিয়ে পরবর্তী অনুসন্ধান চালানো হবে বলে জানিয়েছে দুদক।