আনসার বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। গণঅভ্যুত্থানের সময় অন্যান্য বাহিনী পিছু হটলেও আনসার বাহিনী তাদের অবস্থান ধরে রেখেছিল। এজন্য তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে আনসার সদস্যদের দাবির মধ্যে যা যৌক্তিক, তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে, অযৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হবে না।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাহিনীর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৪৫তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় বাহিনীর সদস্যরা থানাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া সড়ক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়ও তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
তিনি আরও জানান, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ১৬টি আনসার ব্যাটালিয়ন সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। বর্তমানে ৬ হাজার আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য এবং ১৩ হাজার হিল আনসার ও ভিডিপি সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তায় নিয়োজিত।
এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, কূটনৈতিক মিশন এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠানে বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। বর্তমানে ৫১,৬৬৭ জন সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্য ৫,৭৫৭টি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। বাহিনীর ৩৯টি পুরুষ ব্যাটালিয়ন, ২টি মহিলা ব্যাটালিয়ন এবং একটি বিশেষ আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি) রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন রয়েছে।
আনসার বাহিনীর আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বাহিনী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ভিডিপি সদস্যদের জন্য ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি ও নতুন অবকাঠামো সংযোজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) সহযোগিতায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বাহিনীর মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আধুনিক ও যুগোপযোগী নীতিমালার আওতায় আনা হয়েছে, যা তরুণদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে।
বাহিনীর অগ্রযাত্রাকে আরও সুসংহত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় সদস্যদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে নীতিমালা ও বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং কার্যকর নেতৃত্বের মাধ্যমে আনসার বাহিনীর কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে ১৫৬ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সদস্য-সদস্যাকে বাহিনীর বিভিন্ন পদকে ভূষিত করা হয়। পরে তিনি কুটিরশিল্প প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে প্রত্যাশিত সাফল্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে ধাপে ধাপে সব অস্ত্র উদ্ধার করা হবে। তিনি বলেন, “যতদিন ‘ডেভিল’ থাকবে, ততদিন অভিযান চলবে।”
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানি না।”