বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও হুমকিধমকির মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার রবিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এ ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে মঙ্গলবার। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় দেশের ১৫৬ উপজেলায় ভোট শুরু হবে, চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ২৪টি উপজেলায় ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে ভোট হবে ব্যালট পেপারে। নির্বাচনি এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে।
প্রথম ধাপে ৩৬ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতির পর দ্বিতীয় ধাপে আরো বেশি ভোটার আসবে বলে আশা করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। বলা হয়েছে, কম উপস্থিতিতে প্রথম ধাপে ভোটের পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। এটি ভোটারদেরকে কেন্দ্রমুখী করবে। প্রথম ধাপে ৮ মে ভোটের দুই দিন আগেই দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রচার শুরু হয়ে যায়।
এবার প্রচারে সময় পাওয়া গেছে মোট ১৮ দিন, যা শেষ হয়েছে রবিবার মধ্যরাত। অল্প কিছু উপজেলায় প্রচার চলাচলে কিছু কিছু সংঘাত হয়েছে। গাজীপুরে একটি উপজেলায় এক প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে ভোটের দুই দিন আগে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন তিনি।
প্রথম ধাপের মত এবারো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রার্থী নেই নির্বাচনে। দলটির যে নেতারা প্রতীক পেয়েছেন, তারা কেউ নৌকা পাননি। স্বতন্ত্র হিসেবে নিজেদের পছন্দের প্রতীক বেছে নিয়েছেন তারা। বিএনপি আগের ধাপের মতোই এবারের নির্বাচনও বর্জন করেছে। তবে দলটির অন্তত ৬৪ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও এই নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। বলতে গেলে ভোট নিয়ে তাদের কোনো চিন্তাই নেই।
ভোটের আগের দিন সোমবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচন সামগ্রী পৌঁছাবে। এদিন ব্যালট পেপার যাবে ৬৯৭ ভোটকেন্দ্রে, বাকি ১২ হাজার ৩২৩ কেন্দ্রে যাবে ভোটের দিন সকালে। ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরে রবিবার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, “আমরা আশা করি আমাদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। ছোটখাট যে সব সমস্যা হয়েছে, সেগুলো যাতে না হয়, সেজন্য প্রশাসন ও পুলিশ অত্যন্ত সতর্ক রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন প্রথম ধাপের নির্বাচনের চেয়েও সুষ্ঠু হবে।”
ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারেন পছন্দের প্রার্থীকে এবং বাধাহীনভাবে ভোট কেন্দ্রে যাবেন সেটা নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের বার্তা হচ্ছে নির্বাচনটা আমরা শুধু মুখেই নয়, প্রমাণ করে দিয়েছি ৭ (জানুয়ারি) তারিখের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে, ৮ (মে) তারিখের উপজেলা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটারদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই, কেন্দ্রে আসুক। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন।
ইসি জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ১ হাজার ৮২৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান ৬০৩, ভাইস চেয়ারম্যান ৬৯৩ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৫২৮ জন রয়েছেন। নির্বাচনে ভোটার ৩ কোটি ৪২ লাখ। ভোটকেন্দ্র ১৩ হাজার ১৬টি এবং ভোটকক্ষ ৯১ হাজার ৫৮৯টি। এ নির্বাচনে ৭ জন চেয়ারম্যানসহ ২২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ওইসব পদে ভোট হবে না।