Logo
Logo
×

জাতীয়

কমপ্লিট শাটডাউনে সারা দেশে নিহত ১২ জন, কয়েকশ আহত

Icon

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩৮ পিএম

কমপ্লিট শাটডাউনে সারা দেশে নিহত ১২ জন, কয়েকশ আহত

সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে রামপুরা এলাকায়। ছবি : সংগৃহীত

কোটা সংস্কার ও শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ জনই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ঢাকার সাভার এবং মাদারীপুরে একজন করে নিহত হয়েছেন। 

এর বাইরে আরও নিহতের তথ্য ছড়ালেও এখনও সেগুলো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উত্তরায় নিহতদের মধ্যে রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রাখা হয়েছে ৪ মরদেহ। 

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে হাসপাতালটির পরিচালক মিজানুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চারজনের মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী। অন্য দুজনের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

উত্তরায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে আরও দুজন নিহত হয়েছেন।

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ একজনের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একজন নিহত শিক্ষার্থী দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে এসেছে। সে শিক্ষার্থী, এটুকু জানি। তবে কোন প্রতিষ্ঠানের তা সঠিক বলতে পারবো না। মৃত অবস্থায় এসেছিল। তার সঙ্গের শিক্ষার্থীরা ‘বাঁচানো যায় কি না’ বলে তাকে ঢামেকে নিয়ে গেছে।

এছাড়া শতাধিক শিক্ষার্থী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।

অন্যদিকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের তথ্যে জানা যায়, কয়েকশ শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ মাহমুদুল হাসান ১ জন নিহত হওয়ার সত্যতা জানিয়েছেন। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অন্যদিকে সকাল থেকে রাজধানীর বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে চলা সংঘর্ষে কয়েকশ শিক্ষার্থী আহত হন। সেখানে পুলিশের গুলিতে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ড্রাইভার দুলাল মাতবর মারা যান।

তার ছেলে সোহাগ জানান, পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর বনশ্রীর ফরাজী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান তার বাবা।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে নিহত হয়েছেন এক রিকশাচালক। তার বয়স প্রায় ৩০ বছর। তার পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া।

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের এইচএসসি ২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারহান ফাইয়াজ রাজধানীর সিটি হাসপাতালে মারা গেছেন। শিক্ষার্থীর মা নাজিয়া খান তার ফেসবুক পেজে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আহতাবস্থায় মোহাম্মদপুরের সিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

সাভারে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. ইয়ামিন নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি রাজধানীর মিরপুরের এমআইএসটির শিক্ষার্থী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উত্তরার বিএনএস সেন্টার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত হয়েছেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ-১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাকিল পারভেজ। তার মরদেহ রাখা হয়েছে উত্তরার বাংলাদেশ মেডিকেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ডিপার্টমেন্টের প্রধান মাহবুবুল আলম। নিহত শাকিল পারভেজের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। তিনি মো. বেলায়েত হোসাইন ও পারভীন বেগম দম্পতির ছেলে।

মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের সময় পুলিশের ধাওয়ায় শকুনি লেকে পড়ে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিক্ষার্থীর নাম দিপ্ত দে। তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মনিরুজ্জামান ফকির মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানা গেছে, কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, নিউমার্কেট, উত্তরা ও রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ, ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটের আঘাতে আহত হয়ে এ পর্যন্ত ৯০ জন এসেছেন। তাদের মধ্যে ২৭ জনকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন