Logo
Logo
×

জাতীয়

যেভাবে পালিয়েছে নরসিংদী কারাগারের ৮২৬ বন্দী

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০১:৫২ পিএম

যেভাবে পালিয়েছে নরসিংদী কারাগারের ৮২৬ বন্দী

আত্মসমর্পণ করতে আসা চার আসামি। ছবি : সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সহিংসতা ঘটানো হয়। বিভিন্ন সরকারি অফিস, স্থাপনা এবং যানবাহনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। হামলা চালানো হয় নরসিংদী কারাগারে।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে কারাগারের মূল ফটক ভেঙে ৮২৬ আসামি ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। কারাগারের অস্ত্রাগার থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও আট হাজার গুলি লুট করে তারা। এ সময় তারা কারাগারের অফিসকক্ষ, অস্ত্রাগার, বন্দিশালা, ব্যারাক, অফিসারদের বাসাবাড়ি, গ্যারেজে থাকা গাাড়ি, মোটরসাইকেলসহ  বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ বন্দীর মধ্যে অনেকেই আবার আত্মসমর্পণ করেছেন। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তারা কারাগারের সামনে আত্মসমর্পণ করতে আসেন। কিন্তু তাদের আদালতে বা থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

ইয়াকুব মিয়া (৪৫), আপন মিয়া (৩০), বোরহান উদ্দিন (৩৫) ও মো. জাকির হোসেন নামের এই আসামিরা সবাই নরসিংদী কারাগার থেকে পালিয়েছিলেন। এদের কেউ সাজাপ্রাপ্ত আসামি, কেউবা বিচারাধীন মামলায় কারাগারে ছিলেন। চার বন্দীর মধ্যে মাদক মামলার আসামি আপন মিয়া ২ মাস, বোরহান উদ্দিন ১৫ দিন ও মো. জাকির হোসেন ৬ মাস ধরে কারাগারে ছিলেন। তারা জামিনের অপেক্ষায় আছেন। স্বজনদের পরামর্শে তারা ফিরে এসেছেন।

হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ইয়াকুব মিয়া জানান, হত্যা মামলায় ২০১৫ সালে তার ফাঁসির রায় হয়েছিল। পরে উচ্চ আদালত তার সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। ৮ বছরের সাজা খাটা শেষ হয়েছে। ঘটনার দিন পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এখন আত্মসমর্পণ করতে চান।

নরসিংদী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ বন্দীর মধ্যে ১৩১ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। এর মধ্যে ৫ জন থানায় ও ১২৬ জন আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এছাড়া পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন চারজন।

মঙ্গলবার বিকেলে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এসব তথ্য জানান। পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের অভিযানে কারাগার থেকে লুট হওয়া ১৮টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩১ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৩টি অস্ত্র উদ্ধার ও ৯৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অস্ত্র উদ্ধার ও জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একাধিক কারারক্ষী ও এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে হামলাকারীরা মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে কারাগারের দুই দিকের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় কারাগারকে লক্ষ্য করে পেট্রলবোমা মারা হয়। এতে নানা জায়গায় আগুন ধরে যায়। হামলাকারীরা কারারক্ষীদের থেকে ছিনিয়ে নেয়া চাবি দিয়ে বন্দীদের অনেকগুলো কক্ষের তালা খুলে দেন। কিছু কক্ষের তালা ভেঙে ফেলা হয়। চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীরা আসামি ছিনিয়ে নেন। একে একে ৮২৬ বন্দী পালিয়ে যান। এ সময় অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও ৮ হাজার ১৫০টি গুলি লুট করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, কারাগারে যারা হামলা করেন, তাদের হাতে লাঠিসোঁটা, দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাদের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করেন কারারক্ষীরা। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারারক্ষীরা নিরাপদ অবস্থানে চলে যান।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন