জনগণের প্রিয় নেত্রী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে অনেকটা ভালো আছেন। তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা উন্নতির দিকে রয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।

তিনি জানান, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্য-সেবায় বিখ্যাত ও বৃহত্তম হাসপাতাল ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিকে’ বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরুর ৭ দিনের মাথায় তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভালো।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা লন্ডনে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম জানান, বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকটা ভালো আছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আপনারাও পত্র-পত্রিকায় খবর দিচ্ছেন, আমরাও খবর নিয়েছি, উনি (বেগম খালেদা জিয়া) মানসিক এবং শারীরিক উভয় দিক থেকেই আলহামদুলিল্লাহ আগের চাইতে অনেকটা ভালো।

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বুধবার (৮ জানুয়ারি) উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের বিশেষায়িত হাসপাতাল লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান। অত্যাধুনিক স্বাস্থ্যসেবা সম্বলিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ১২টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। কাতারের দোহায় যাত্রাবিরতি দিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ৮ জানুয়ারি লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে হিথ্রো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছায়। সেখান থেকে তাঁকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। তাঁর বড় ছেলে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে মা’কে হাসপাতালে নিয়ে যান। সঙ্গে ছিলেন তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান, ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, নাতনী ব্যারিস্টার জাইমা রহমান এবং জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমানের সান্নিধ্যে মানসিকভাবেও প্রশান্তিতে রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তিনি ছেলের বাসায় রান্না করা খাবার খাচ্ছেন। সকাল এবং বিকেলের নাস্তাও বাসা থেকে দেওয়া হচ্ছে। ছেলে তারেক রহমান নিজেই খাবার নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের সফরসঙ্গী ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এবং ডা. এনামুল হক চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতারা লন্ডনে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এবং বিভিন্ন সময়ে বিএনপি’র মিডিয়া সেলের মাধ্যমে ঢাকার সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো ভিডিও বার্তায় এসব তথ্য তুলে ধরেন।

৭৯ বছর বয়সী এই নেত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর অসুস্থতা আরও বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে তিনি জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও পড়েছেন কয়েকবার। এ কারণে রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।