বিবিসি বাংলাকে মির্জা ফখরুল
ছাত্রদের প্রতিনিধি সরকারে রেখে দল নির্বাচন করলে মানবে না বিএনপি
যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১১ এএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করার পরও যদি সরকারে তাদের প্রতিনিধি থাকে, তাহলে সরকার নিরপেক্ষ থাকতে পারবে না। এই পরিস্থিতিতে তারা নির্বাচন করতে চাইলে রাজনৈতিক দলগুলো তা মেনে নেবে না।
বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বিরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে না পারে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।
মঙ্গলবার নেওয়া এ সাক্ষাৎকারটি বুধবার বিবিসি বাংলা প্রকাশ করেছে।
জুলাই-আগস্টের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই আর্লি ইলেকশন। যৌক্তিক সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। এটি অসম্ভব কিছু নয়। সরকার যদি চায়, তাহলে জুন-জুলাই বা আগস্টের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।’
যদি নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হয়, তখন কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলীয় আলোচনা এবং আন্দোলনকারী অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা দুই বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছি। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার, জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, নির্বাচন কমিশন সংস্কার এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনো সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন। তাই যত দ্রুত নির্বাচন হবে, ততই মঙ্গল।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার যদি পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারে, তাহলে তারা নির্বাচন পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে যদি কোনো পক্ষপাতিত্বের আভাস পাওয়া যায়, তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের যদি রাজনৈতিক দল তৈরি করার সুযোগ থাকে এবং সেই দলের প্রতিনিধি সরকারে থাকে, তবে তা নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলবে। সরকার যদি ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন করতে চায়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো তা মেনে নেবে না।’
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, ‘আমরা সবসময় গণতন্ত্রের পক্ষে থেকেছি। মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসি, কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট সিস্টেমসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংস্কার আমরা চালু করেছি। আমাদের দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং এ লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ছয় বছর কারাগারে ছিলেন। তারেক রহমান এখনও বিদেশে আছেন। আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, ৭০০ জন গুম এবং হাজারো মানুষ খুন হয়েছে। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এই ত্যাগ স্বীকার করেছি।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, বিএনপি সবসময় গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কাজ করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।