Logo
Logo
×

প্রবাস

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার : বেপরোয়া দৌড়ে এরা কারা!

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪২ পিএম

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার : বেপরোয়া দৌড়ে এরা কারা!

বাঁ থেকে মাস বাংলা ওভারসীজের (আরএল নং-১৫৫৩) জামিল হোসেন, এইচআর ডেভলপমেন্ট সেন্টারের ফকরুল ইসলাম (আলএল-৪৫২), মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের (আরএল-২১), মোহা. নূর আলী দামাসী কর্পোরেশনের (আরএল-৭২৭) নোমান চৌধুরী, জয়নাব জাফরীন ইন্টারন্যাশনালের (আরএল) মাহবুবুল করিম সিদ্দিক জাফর, সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের (আরএল-৪৯২)শামীম আহমেদ নোমান।

বিতর্কিত ব্যবসায়ী ফকরুল ইসলাম ও নূর আলীর নেতৃত্বে মালয়েশিয়া শ্রম বাজার দখলের চেষ্টা করছেন বাংলাদেশে এসোসিয়েশন অব রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) একাধিক নেতা ও কয়েক ব্যবসায়ী। তারা সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গেও সাক্ষাত করেছেন। সেখানকার কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দিয়ে শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছেন। কিন্তু তারা সফল হননি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) একটি অভিযোগ জমা হয়েছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার অপচেষ্টাকারি এরা কারা?

তাদের সম্পর্কে দুদকে জমা হওয়া অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন রিক্রুটিং এজেন্সি ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলে ছিলেন, মাস বাংলা ওভারসীজের (আরএল নং-১৫৫৩) জামিল হোসেন, এইচআর ডেভলপমেন্ট সেন্টারের ফকরুল ইসলাম (আলএল-৪৫২), ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের (আরএল-২১), মোহা. নূর আলী দামাসী কর্পোরেশনের (আরএল-৭২৭) নোমান চৌধুরী, জয়নাব জাফরীন ইন্টারন্যাশনালের (আরএল) মাহবুবুল করিম সিদ্দিক জাফর ও সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের (আরএল-৪৯২) শামীম আহমেদ নোমান।

এছাড়াও এই চক্রে আরও আছেন খন্দকার ওভারসীজের (৮১২), মাইক্রো এক্সপোর্ট হাউজের (আরএল-৪৪৮) মো. মোস্তফা মাহমুদ, বায়রার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করার রিয়াজ ওভারসীজের (আরএল-৩০) রিয়াজ ও আফিয়া ওভারসীজের (আরএল-১০১০) আলতাফ খান।  

অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার আমলে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ বাণিজ্যে ১০ সিন্ডিকেটের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিলেন ফকরুল ইসলাম। মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাণিজ্যের জন্য বাগিয়ে নিয়েছেন নিজের মেডিক্যাল সেন্টার ওয়েলকাম মেডিক্যাল। প্রায় ৭০ হাজার কর্মীর নাম মাত্র স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এখন পরিচয় লুকিয়ে কমপক্ষে দুইটি লাইসেন্স রয়েছে ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকায়। সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকাতেও রয়েছে তার এজেন্সি ও ওয়েলকাম মেডিক্যাল সেন্টার। 

চলতি বছরের ৩১মে শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার পর তিনিসহ আরো কয়েকজন মিলে আবার চেষ্টা করছেন মালয়েশিয়ায় ভিন্ন ফর্মুলায় লোক পাঠানোর শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠনে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার ক্ষমতাশীল একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাধর কতিপয় নেতার সঙ্গে তাদের কয়েক জনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হয়। জানা যায়, একটি রাজনৈতিক প্রোগ্রামে মোটা অংকের অর্থ স্পন্সর করার সূত্রে দাওয়াত পান ফখরুল ও তার অনুসারীরা। শুধু তাই নয়, দেখা করেছিলেন মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। সেখানকার কর্মকর্তারা তার প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ায় দেশে ফিরে নিজেকে বঞ্চিত দাবী করে শুরু করেছেন নানা অপতৎপরতা।

জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্ট একজন ব্যবসায়ী জানান, ফকরুল এখন বায়রার সভাপতি হওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলের অনুকম্পা পেতে সিন্ডিকেট বিরোধী কথা বলছেন। অথচ তিনি সব সময়ই সিন্ডিকেটের অংশ ছিলেন এবং নিজেও সিন্ডিকেট করেছেন। 

ফখরুলের বিরুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন টকশো, সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে ভুল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে শ্রমবাজারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। তার বক্তব্যগুলো তার অনুসারীরা মালয়েশিয়াতে ছড়িয়ে দেয়ায় সম্ভাব্য নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশী শ্রমিক বিমুখ হচ্ছেন। 

বায়রা সদস্যরা বলেন, ১০১ সিন্ডিকেট ভুক্ত তার বেনামী প্রতিষ্ঠান ত্রিবেনি ইন্টারন্যাশনাল ও সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনাল। যার নেপথ্য মালিক ফকরুল ইসলামের। তিনি নিজের লাইসেন্স সরাসরি ব্যবহার না করে অন্যের নামে ব্যবসা করছেন। অন্য যারা ব্যবসা করেন তাদের লাইসেন্স একটা অথচ তার লাইসেন্স ২টা। তাছাড়া অন্য ব্যবসায়ীরা হয়তো মূল ১০১ এজেন্সির মধ্যে অথবা সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ছিলেন। কেউ কেউ শুধু মেডিক্যাল সেন্টারে ছিলেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি সব জায়গায় আছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনি ও তার সহযোগী সিন্ডিকেটের কারণে মালশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে। ওই সব নেতাদের আগে জবাবহিতার আওতায় আনা জরুরী বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

অভিযোগের বিষয়ে বায়রার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম বলেন, আমি মালয়েশিয়ার একজন ব্যবসায়ী। মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানো আমার অধিকার। আমি কর্মী পাঠিয়েছি কিন্তু আমি সিন্ডিকেট তো করিনি। তিনি বলেন, সম্মানিত সদস্যদের অধিকার রক্ষায় কথা বলে যাবো। আমার কোথাও কোনো কর্মীর সমস্যা হলে আমি অবশ্যই দায়িত্ব নেবো।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন