অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন তামিম
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে ফরচুন বরিশালকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। তবে ম্যাচশেষে ঘটে অপ্রীতিকর এক ঘটনা। ম্যাচ শেষে তামিম ইকবালকে মেজাজ হারাতে দেখা যায় এবং রংপুরের অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়ান বরিশালের এই অধিনায়ক।
মূলত ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটাররা যখন হাত মেলাতে যান, তখনই বিতর্কিত এই ঘটনার সূত্রপাত। এ সময় তামিমকে উদ্দেশ করে আপত্তিকর মুখভঙ্গি করেন হেলস। সেটা ভালোভাবে নেননি তামিম। একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে হেলসের দিকে তেড়ে যেতে চান বরিশালের অধিনায়ক।
ম্যাচ শেষে দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে হেলস বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, ম্যাচ হেরে সে (তামিম) হতাশ ছিল। সে বলল, ‘‘আমি কিছু বললে, সেটি যেন সামনাসামনি বলি।’’ অথচ আমি তাকে কিছুই বলিনি। ২০২১ সালে আমি বিয়ার পানের জন্য (ক্রিকেটে) ২১ দিন নিষিদ্ধ হয়েছিলাম, সেই প্রসঙ্গ নিয়েও সে (তামিম) কথা বলেছে। আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যা খুবই লজ্জাজনক।’
ভিডিওতে দেখা গেছে, অ্যালেক্স হেলসের দিক থেকেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শুরু। ম্যাচ শেষ হতেই তামিমের দিকে অশোভন অঙ্গভঙ্গি করেন তিনি। হাত মেলানোর সময় তামিমকে ব্যঙ্গও করেন তিনি। তামিম তখন হেলসকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘এমন করছো কেন? কিছু বলার থাকলে মুখে বলো। বি অ্যা ম্যান।’
এরপর হেলসও জবাব দেন। এ সময় তারা তর্কে জড়িয়ে পরেন। একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে হেলসের দিকে তেড়ে যেতে চান বরিশালের অধিনায়ক। এ সময় বাকি ক্রিকেটার ও স্টাফরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তামিমকে টেনে ধরেন রংপুরের টিম ডিরেক্টর শাহনিয়ান তানিম।
বিষয়টি নিয়ে তামিমও মুখ খুলেছেন। ক্রীড়া সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে পুরো ঘটনা স্পষ্ট করেছেন তিনি। পাশাপাশি হেলসের তোলা অভিযোগ নিয়েও সবকিছু খোলাসা করেছেন।
তামিমের ভাষ্যমতে, ‘মাঠের মধ্যে অনেক কিছুই হয়। আমি এটা মাঠের মধ্যেই রাখতে চাই। কিন্তু আমি দেখলাম তাদের টিম, সে একটা চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছে, তো যেহেতু সে বলেছে আমি বলব, কেউ কাউকে কিছু না বললে বা কিছু না করলে কেন, সে তার (হেলস) সঙ্গে ঝামেলায় জড়াবে?’
এই সময়ে হেলসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগও আনেন তামিম। তার দাবি, সতীর্থ ইকবাল হোসেন ইমনকে ব্যঙ্গ করার কারণেই মেজাজ হারান তিনি।
তামিমের ভাষ্য, ‘সে (হেলস) লাস্ট ম্যাচে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ১৭ বছর বয়সী ইকবাল হোসেন ইমনকে অ্যাবিউজ করেছে। এটা টিভিতে দেখা গেছে, আজকেও তাকে ব্যঙ্গ করেছে। এরপর উদযাপনের একটা ভিডিওতে দেখবেন, রংপুর অসাধারণ একটা ম্যাচ জিতেছে; এটা আমরাও করতাম। সবাই সোহানের দিকে দৌড়াইছে। কিন্তু হেলস আমার দিকে তাকিয়ে ব্যঙ্গ করছিল। সে ওখান থেকেই আমাকে ব্যঙ্গ করছিল যেন সে একটা ফাইট চাচ্ছে। এরপর আবারও সে ইকবাল হোসেন ইমনকে উল্টাপাল্টা কথা বলছিল, তখন আমার একটা অবস্থান নিতে হতো এবং আমি আমার সতীর্থের জন্য এটা করতে লজ্জিত হইনি। এরপর আমিও বলেছি, সেও বলেছে।’
হেলসের অভিযোগ নিয়ে তামিমের মন্তব্য, ‘সে একটা অভিযোগ করেছে বিয়ার খাওয়ার, ২১ দিন নিষিদ্ধ ছিল, এমন। আমি আসলে ওকে তেমন ফলো করি না। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টাও জানতাম না। এতটুকু জানি ওর নামে ইংল্যান্ডে অনেক অভিযোগ আছে। আমাকে বা আমার দলের কাউকে এমন কিছু বললে আমাকে টিভিতে যেমনই দেখাক; আমি অবশ্যই প্রতিবাদ করব।’
তামিম আরও বলেন, ‘মাঠের মধ্যে খেলোয়াড়দের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সে চলে যাওয়ার আগে অবাক করার মতো একটা সাক্ষাৎকার দিয়ে গেছে। যখন আমি তার সাক্ষাৎকার দেখলাম, আমার মনে হয়েছে, মানুষের আমার বিষয়টাও জানা উচিত।’