বাংলাদেশে ডিজেল পাইপলাইন সম্প্রসারণের পরিকল্পনা স্থগিত করল ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে ডিজেল পাইপলাইন আরও গভীরে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা স্থগিত করেছে ভারত। বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাইভমিন্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের (আইবিএফপি) মাধ্যমে প্রতিবেশী বাংলাদেশে ডিজেল বহনে ভারতের পরিকল্পনা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ৩ জন ব্যক্তি লাইভমিন্টকে বলেছেন, ১৩১ কিলোমিটার পাইপলাইন বাংলাদেশের পার্বতীপুরের বাইরে প্রসারিত করার প্রস্তাব ছিল। বর্তমানে এই পাইপলাইনটি পার্বতীপুরেই শেষ হয়েছে। তবে, ভারত সরকার এখন এই পাইপলাইন সম্প্রসারণের বিষয়টি বিরতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উপরে উদ্ধৃত তিনজনের মধ্যে একজন বলেছেন, ‘যেহেতু প্রকল্পটি ভালোভাবে কাজ করছে এবং অনেকাংশে সফল হয়েছে, তাই প্রতিবেশী বাংলাদেশের আরও জায়গায় পাইপলাইনটিকে আরও প্রসারিত করা হবে না কেন তা বিবেচনাধীন ছিল। তবে এখন (বাংলাদেশের) রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিতিশীল হওয়ায় ভারত এই বিষয়ে আরও বিবেচনা ও আলোচনার জন্য অপেক্ষা করতে চায়। তবে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও টাইমলাইন দেওয়া যাবে না।’
গত বছরের মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরের একটি তেল ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত আন্তঃসীমান্ত পাইপলাইনটি উদ্বোধন করেছিলেন।
আইবিএফপি পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন হাই-স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) বাংলাদেশে পরিবহন করার ক্ষমতা রয়েছে এবং বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় ৭টি জেলায় পণ্যটি সরবরাহ হয়ে থাকে। এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি পাইপলাইন।
উদ্ধৃত ৩ জনের মধ্যে আরেকজন বলেন, ডিজেলের পাশাপাশি বাংলাদেশে উচ্চ সালফার ফুয়েল অয়েল (এইচএসএফও) এবং ফার্নেস অয়েল পাঠানোর প্রস্তাবও বিবেচনা করছে ভারত। এইচএসএফও মূলত সামুদ্রিক শিল্পে ব্যবহৃ হয়ত। আর ঘর, ব্যবসা এবং শিল্প ইউনিট গরম করার জন্য ব্যবহৃত হয় ফার্নেস অয়েল।
এছাড়া খুচরা চাহিদা ছাড়াও পেট্রোলিয়াম পণ্যের এই সরবরাহ বাংলাদেশের শিল্পের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের প্রধান বস্ত্র শিল্পকে চালু রাখার জন্য ডিজেলের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।
২০১৫ সাল থেকে আসামের নুমালিগড় শোধনাগার রেলপথে বাংলাদেশকে পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ করে আসছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গত শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে ভারতের ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলো’ প্রভাবিত হয়েছে।
তবে একইদিনে এনআরএল চেয়ারম্যান রঞ্জিত রথ জানান, আইবিএফপির কার্যক্রমের ওপর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ‘কোনো প্রভাব’ নেই।
তিনি দাবি করেছিলেন, ‘বরং, আমরা আমাদের শিলিগুড়ি টার্মিনাল থেকে উত্তর বাংলাদেশে এবং শিলচরের কাছে নতুন টার্মিনাল থেকে উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশে কার্যক্রম বাড়াচ্ছি।’