মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে যে পথ দেখালো রাশিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
দশকের পর দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে, তার স্থায়ী সমাধান হতে পারে মাত্র একটি শর্ত বাস্তবায়ন করলে; আর সেটি হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্থাপন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন।
কয়েক দিন আগে তুরস্কের দৈনিক হুরিয়েতকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ল্যাভরভ। শুক্রবার সেই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে হুরিয়েত। সাক্ষাৎকারে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংঘাত সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে ল্যাভরভ বলেন, ‘গত বেশ কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলছে মধ্যপ্রাচ্যে। সম্প্রতি আমরা দেখছি, ওই অঞ্চলে সহিংসতার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে এবং একের পর এক দেশ এমন এক সংঘাতের ঘূর্ণাবর্তে ডুবে যাচ্ছে, যেখান থেকে কেউই জয়ী হয়ে ফিরতে পারবে না।’
“অথচ মাত্র একটি শর্ত পূরণ হলেই সংঘাত-সহিংসতা বন্ধ হয়ে যাবে মধ্যপ্রাচ্যে। সেটি হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্থাপন করা এবং এই কাজটি করতে হবে ১৯৬৭ সালে দুই দেশের যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা যথাসম্ভব অক্ষুন্ন রেখে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংঘাতের শুরু। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী, যা এখনও চলছে। ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন, অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিজানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৩ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
তবে এ যুদ্ধ শুধু গাজা উপত্যকাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; লেবানন, ইরান ও সিরিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। একই সময়ে সিরিয়া এবং ইরানে সংক্ষিপ্ত বিমান অভিযান চালিয়েছে দেশটির বিমান বাহিনী। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইতোমধ্যে যে কোনো সময়ে ইসরায়েলে সামরিক হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছেন।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে হামাস এবং লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারদের প্রায় সবাই নিহত হয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর এক সপ্তাহ পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সেখানে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল রাশিয়া। পরিষদের অপর স্থায়ী সদস্য চীন সেই প্রস্তাবে সমর্থনও জানিয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে সেটি গৃহীত হয়নি।
হুরিয়েতকে ল্যাভরভ বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু সহিংসতা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে যে কোনো সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তখন মহাবিপর্যয় শুরু হবে।’