বিদ্রোহের তোপের মুখে পালালেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
বিদ্রোহের তোপের মুখে অবশেষে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তিনি বিমানে করে অজানা গন্তব্যের দিকে রওয়ানা দিয়েছেন। তবে শনিবার প্রেসিডেন্ট বাশারের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু বিদেশি গণমাধ্যমে গুঞ্জন ও ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট দামেস্ক ছেড়েছেন বা দ্রুত অন্য দেশে চলে গেছেন। কিন্তু তা সত্য নয়। প্রেসিডেন্ট জাতীয় ও সাংবিধানিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন ও রাজধানী দামেস্কেই আছেন। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে। দেশটির দুজন কর্মকর্তার সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কে ঢুকে পড়েছে। শহরটির বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এদিকে রোববার ভোরেই সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেয় বিদ্রোহী যোদ্ধারা। ২০১১ সালে এই শহর থেকেই প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিরোধী বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। মাত্র এক দিনের লড়াইয়ের পরে রবিবার ভোরে হোমসের মূল শহরটির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার কথা জানায় বিদ্রোহীরা। এখন তারা রাজধানী দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইতোমধ্যে দামেস্কের উপকণ্ঠে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরই মধ্যে খবর এসেছে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
হোমসের কেন্দ্রীয় শহর থেকে সরকারি সেনা প্রত্যাহারের পর হোমসের হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা ‘আসাদ চলে গেছে, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক, বাশার আল-আসাদের পতন হোক’ স্লোগানে নাচ-গানে মেতে ওঠেন। বিদ্রোহীরা আকাশে ফাঁকা গুলি চালিয়ে হোমসের বিজয় উদযাপন করেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলতে দেখা যায় স্থানীয়দের।
হোমসের পতনকে বিদ্রোহীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। শহরটি সিরিয়ার কৌশলগত কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এটি দখলে নেওয়ার ফলে বিদ্রোহীরা গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে ক্রসরোড এম-ফাইভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। উপকূলীয় অঞ্চল লাটাকিয়া থেকে দামেস্ককে যাওয়ার মূল সড়ক এটি। লাটাকিয়ায় রাশিয়ার নৌঘাঁটি রয়েছে। সুন্নি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের কমান্ডার আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি, হোমস দখলকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছেন। যেসব সরকারি সেনা অস্ত্র সমর্পণ করবেন তাদের ক্ষতি না করার আহ্বানও জানান তিনি। বিদ্রোহীরা শহরের কারাগার থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্ত করেছে। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাগজপত্র পুড়িয়ে তাড়াহুড়ো পালিয়েছে।