Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

দুর্নীতি দমন মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত : টিউলিপকে ইলন মাস্ক

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৩ পিএম

দুর্নীতি দমন মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত : টিউলিপকে ইলন মাস্ক

ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক ব্যাপক চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগের কারণে তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাকে নিয়ে সমালোচনা চলছিল। তবে তার পদত্যাগের পরও এই সমালোচনা থামেনি। এবার টিউলিপ ইস্যুতে মুখ খুলেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্ক।

তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই একজন দুর্নীতিবাজ। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।

মূলত টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। গত বছর তার দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি দেশটির ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। কিন্তু বাংলাদেশে এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

এমন অবস্থায় ব্যাপক চাপের মুখে গত মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন টিউলিপ। এরপর বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে টিউলিপের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন ইলন মাস্ক। এক্সে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি বলেছেন, “শিশুকল্যাণের দায়িত্বে থাকা লেবার মন্ত্রী এমন ব্যক্তিদের রক্ষা করেছেন যারা নির্দয়ভাবে অন্যদের শোষণ করেছেন। তাদের (লেবার পার্টির) দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিবাজ।”

টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার নিজ দলের সদস্যদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন। টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে এক লেবার এমপি বলেছেন, “টিউলিপকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত ছিল আত্মঘাতী। সবাই জানত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে তার সম্পর্ক ছিল, যাদের অনেক ক্ষমতা ও অর্থ আছে। তাকে এই দায়িত্ব দিয়ে এতসব কিছু করার বিষয়টি কী ভালো ছিল?”

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে টিউলিপ ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চলছে। গত ডিসেম্বরে দুর্নীতির এই অভিযোগের তদন্তে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম যুক্ত হয়। এরপর তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা দেশের বড় ব্যাংকগুলোকে সিদ্দিকের সাথে সম্পর্কিত অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিবরণ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক সানডে টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, লন্ডনের কিং’স ক্রস এলাকায় অবস্থিত ২ শয্যাকক্ষের একটি ফ্ল্যাট ২০০৪ সালে টিউলিপ সিদ্দিককে আবদুল মোতালিফ নামের এক ডেভেলপার উপহার দিয়েছিলেন। মোতালিফ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

টাইমসের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) দিয়ে ২০০১ সালের জানুয়ারিতে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন আবদুল মোতালিফ। তিনি ফ্ল্যাটটি বেশ সস্তায় পেয়েছিলেন, কারণ একই বছর আগস্ট মাসে ফ্ল্যাটটির পার্শ্ববর্তী আরেকটি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা)।

যুক্তরাজ্যের ইলেক্টোরাল রোল ডেটার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালে উপহার হিসেবে পাওয়ার পর কিং’স ক্রসের সেই ফ্ল্যাটটিতে কয়েক বছর ছিলেন টিউলিপ। এরপর তার অন্য ভাই-বোনরাও সেখানে বেশ কয়েক বছর থেকেছেন। বর্তমানে ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিয়েছেন টিউলিপ, যা থেকে তিনি বাৎসরিক ৯০ হাজার পাউন্ড (১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা) উপার্জন করছেন।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
Email: [email protected]

অনুসরণ করুন