দাবি নেতানিয়াহুর
গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘অস্থায়ী’, ফের যুদ্ধ শুরুর অধিকার আছে ইসরায়েলের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৩ এএম

ছবি : সংগৃহীত
দীর্ঘ ১৫ মাসের বিধ্বংসী যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনের গাজায় বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হতে যাচ্ছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এটিকে ‘অস্থায়ী’ যুদ্ধবিরতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, প্রয়োজনে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার অধিকার ইসরায়েলকে দেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির পটভূমি ও চুক্তির প্রধান দিকসমূহ:
চুক্তির মধ্যস্থতা: মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে।
বন্দি বিনিময়: চুক্তির প্রথম ধাপে, রোববার বিকেল ৪টায় ইসরায়েল ৭৩৭ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। অন্যদিকে, হামাস ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্ত করবে।
ইসরায়েলি বাহিনীর অবস্থান পরিবর্তন: গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী আরও পূর্ব দিকে সরে যাবে, যাতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের ঘরে ফিরতে পারেন।
ত্রাণ সহায়তা: ত্রাণবাহী ট্রাক প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করবে, যা দীর্ঘদিনের মানবিক সংকট লাঘবে সহায়ক হবে।
তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা:
প্রথম ধাপ: বন্দি মুক্তি, ইসরায়েলি বাহিনীর সরে যাওয়া, এবং ত্রাণ সহায়তার প্রবাহ নিশ্চিত করা।
দ্বিতীয় ধাপ: বাকি বন্দিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের টেকসই সমাধান নিয়ে আলোচনা।
তৃতীয় ধাপ: গাজার পুনর্গঠন। এটি দীর্ঘমেয়াদি কাজ, যার মধ্যে হামাসের হাতে থাকা বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি আলোচনায় আসবে।
ইসরায়েলের অবস্থান:
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই যুদ্ধবিরতিকে অস্থায়ী বলে দাবি করেছেন। তার মতে, ইসরায়েল যেকোনো সময় প্রয়োজন হলে আবারও যুদ্ধ শুরু করতে পারে।
মানবিক সংকট:
চলমান যুদ্ধ ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের জন্য অভূতপূর্ব মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে। ঘরবাড়ি হারানো ফিলিস্তিনিরা এই যুদ্ধবিরতিকে আশার আলো হিসেবে দেখছেন। এর ফলে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পাবেন।
কাতারের বক্তব্য:
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানান, এই যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি প্রাথমিক ধাপ নেওয়া হয়েছে। তবে টেকসই শান্তির জন্য আরও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ প্রয়োজন।
যদিও এই যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি এনে দিচ্ছে, তবু টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক মহলের দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।