কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ৭০০ জনের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহীগোষ্ঠী এম২৩-এর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ দিনে ৭০০ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের বরাতে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, গত রবিবার থেকে রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় ২,৮০০ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কঙ্গো সরকারের যৌথ মূল্যায়নে হতাহতের এই পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে কঙ্গো সেনাবাহিনী ও এম২৩ বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়েছে। এম২৩ বিদ্রোহীরা উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা দখল করেছে এবং বর্তমানে দক্ষিণ কিভু প্রদেশের রাজধানী বুকাভুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এম২৩-এর অগ্রগতি প্রতিহত করতে কঙ্গোর সামরিক বাহিনী গোমা ও বুকাভুর মধ্যবর্তী রাস্তায় প্রতিরক্ষামূলক লাইন স্থাপন করেছে। এছাড়া বুকাভুকে রক্ষা করতে শত শত বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে।
এক তরুণ এএফপিকে বলেন, "আমি আমার দেশের জন্য মরতে প্রস্তুত।"
এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী পশ্চিম দিকে ২,৬০০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী কিনশাসা পর্যন্ত অগ্রসর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিদ্রোহী এই গোষ্ঠী কঙ্গোর তুতসি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে এবং একসময় কঙ্গোর সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করত, তবে ২০১২ সালে এটি সেনাবাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২০২২ সাল থেকে এম২৩ বিদ্রোহীরা পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা দখল করতে শুরু করে।
এম২৩ দাবি করছে, তারা সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই করছে। অন্যদিকে কঙ্গোর সরকার বলছে, রুয়ান্ডা-সমর্থিত এই গোষ্ঠী পূর্বাঞ্চলের বিশাল খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।
কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেস কাইকওয়াম্বা ওয়াগনার বিবিসিকে বলেন, "রুয়ান্ডা অবৈধভাবে আমাদের দেশ দখল করছে এবং শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পল কাগামেকে জবাবদিহির আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে।"
রুয়ান্ডার সরকারের মুখপাত্র ইয়োলান্ডে মাকোলো এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমরা যুদ্ধে আগ্রহী নই, সংঘাতে জড়াতে চাই না, কেবল আমাদের ভূখণ্ডে সংঘাতের বিস্তার রোধ করতে চাই।"
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৩ সালে এম২৩ গোষ্ঠীকে ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ রুয়ান্ডার সেনা সহায়তা দিয়েছে।
গত সপ্তাহে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সংঘর্ষে ১৩ শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়া, চলতি বছরে সংঘাতের কারণে প্রায় ৪ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।